আমি মাঝে মাঝেই নিজের এবং বন্ধুদের পুরানো কবিতা খুঁজে খুঁজে পড়ি।  ২০১৪ সালে "কাঁটাতারের বাধা" নামে একটি কবিতা লিখেছিলাম।  একটু আবেগ মিশ্রিত লেখা ছিল।  সেখানে বন্ধুদের অনেক মন্তব্য ছিল,  সে সব ভুলেই গেছিলাম কিন্তু আজ আবার পড়তে গিয়ে অবাক হয়ে দেখি সেখানে 'বোদরুল আলম' সাহেবের দেওয়া একটি অভূতপূর্ব মন্তব্য যেটা আমি ভুলেই গেছিলাম।  বোদরুল সাহেবের সাথে গত বছরও আলাপ হয় নি ,  এ বছরেও হয় নি।  সে আফসোস আমার রয়েই যাবে। মন্তব্য টি পড়তে গিয়ে মনে হল এখানে প্রকাশ করি কারণ আমার লেখার থেকেও এই মন্তব্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমার কাছে এক স্মরণীয় মন্তব্য হয়েই থাকবে।


বোদরুল সাহেব,  আমি কৃতজ্ঞ আপনার মতন বিদগ্ধ মানুষের কাছে।
-------------------------------------------



বোদরুল আলম ২০/১১/২০১৪, ১১:৩১ মি:


'কাঁটাতারের বাধা' শারীরিক চলন গমনকে দুঃসাধ্য ক'রে তুললেও, কখনো সখনো আবার 'শরীরটা কাঁটার ঘায়ে রক্তাক্ত' ক'রে তুলতে সক্ষম হ'লেও, নিছক কোন 'কাঁটাতার' যে দু'পাশের হৃদয়ের ভাবতরঙ্গের প্রবাহকে প্রতিরোধ করতে কতখানি অপারঙ্গম, তার এক হৃদয়স্পর্শী দলিল যেন আপনার এই মনোজ্ঞ কবিতাখানি। মন ছুঁয়ে গেল, কবি।


কাঁটাতারের পাহারদারদের ক্ষমতা কোথায় আন্তরিকতার টানকে আটকানোর! সেই টানকে বুঝতে তারা কতটুকুই বা আন্তরিক! তাই, পোশাক আশাকে ঢেকে রাখা মানব শরীরটাকে যতই আঘাত করুক, 'মনের ক্ষত ওরা দেখতে পায় না' যে। তাই ওদের বোঝাই হয়ে ওঠে না যে, ঐ ক্ষতবিক্ষত শরীরটার মতই অভিন্ন লাল শোণিতের ধারা তাদের নিজের শরীরেও। সীমান্তের কাঁটাতার দিয়ে ভৌগোলিক সীমারেখা প্রতিষ্ঠার সাথে মানবিক হৃদয়ের অনুভবের ফল্গুধারার সংঘাত চরমে ওঠে যেন, যখন আমাদের কল্পনায় ফুটে ওঠে কোন 'আজানের (আযানের) শব্দ'-এর সাথে সাথে কোন এক ভাইয়ের ছবি যে হয়ত বা দোয়া করছে তার বিচ্ছিন্ন দিদির জন্য। এ যেন এক রাষ্ট্রনৈতিক বাস্তবতার সাথে এক মানবিক বাস্তবতার সংঘাত। 'হয়তো আবারও কোনও একদিন মুখোমুখি হতে' পারার অপেক্ষার সাথে পাঠকও এমন একাগ্রচিত্ত হয়ে পড়ে যে, আমাদের শুভকামী মন আনমনেই অভিসম্পাত দিয়ে বসে ঐ অনৈতিক কাঁটাতারের বেড়াগুলিকে। আর ঠিক এইখানে, কবিতাটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে চকিতেই।


অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই কবিকে। ভালো থাকবেন।