আমি সোহাগী ...
থাকি ঐ তিনকোণা পার্কের  পাশের
খোলা ফুটপাথে ।
চার বাড়ী কাজ করি
রাতে এক বাড়ীর বারান্দায় শুতে দেয়
বদলে পঞ্চাশ টাকা মাইনে কম দেয় ।


হ্যাঁ , আমিও স্বপ্ন দেখি
সুখের স্বপ্ন দেখি
ভালবাসার স্বপ্ন দেখি
স্বপ্ন দেখি একদিন আমিও
বাবুদের বাড়ীর মেয়ে হবো ।
তাদের চকচকে গাল দিয়ে
গড়িয়ে পড়া সুখ দুহাতে মেখে নিতে ইচ্ছে করে ।


একটুকরো ভাঙা আয়না আছে আমার
তা দিয়ে শুধু মুখটুকুই দেখা যায়
শরীরটা না দেখা গেলেও বুঝতে পারি অনেককিছুই ।
ও বাড়ীর বৌদিটা খুব ভালো
একটা লাল জরি পাড় শাড়ী দিয়ে বলেছে পুজোয়  পরিস ।


না, পুজো আমার ভালো লাগে না
সব ফুটপাথগুলো তোমরা জোর করে নিয়ে প্যান্ডেল বানাও
আমার কথা কেউ ভাবো না
আর তখনই মাথার মধ্যে আগুন জ্বলে...
পুজো তো তোমাদের
তোমাদের দামী জামা , চকচকে গাল
গায়ে কি সুন্দর গন্ধ !
আর আমি  আমার ছোট্ট বোনটাকে আগলে নিয়ে
ঘুরে বেড়াই রাস্তায় রাস্তায়
তোমরা যখন দামী হোটেলে খাওয়া দাওয়া করো
তখন আমার রান্না হয় না  
একচিলতে ফুটপাথ সেটাও যে তোমরা ছিনিয়ে নিয়েছ ...


বোনটা যখন আবদার করে
“ দিদি কি সুন্দর মাংসের গন্ধ আসছে রে
পুজোয় একদিন মাংস রাঁধবি “ ?
চোখটা জ্বালা করে ওঠে
ছুটে যাই প্যান্ডেলে...
ঠাকুরের সামনে দাঁড়িয়ে বলতে থাকি
তুমি কেন সক্কলের মা হতে পারো না ?......