সংযুক্তাকে চেনেন আপনারা ?


প্রথম দেখা কফি হাউসে
উল্টোদিকের টেবিল থেকে উঠে এসে
চেয়ার টেনে বসে বলেছিল ,” আলাপ করতে এলাম” ।
অল্প বয়সের তার সেই উচ্ছ্বলতা মুগ্ধ করেছিল।


সেই শুরু ...... তারপর বারবার দেখা
একদিন বলেছিল , “আমায় নিয়ে একটা কবিতা লিখবে?”
হেসে বলেছিলাম , “এমন কি আছে তোমার যে তুমি
আমার কবিতা হবে !”
অভিমানে দুটো গাল গোলাপি হয়েছিল
সাতদিন কথা বলে নি দেখা হওয়া সত্বেও
আর আজ সেই তোমাকে নিয়েই লিখতে বসেছি সংযুক্তা ...


ভারি অদ্ভুত মেয়ে ছিল সে
তিনটি প্রিয় রঙ ছিল তার
লাল ছিল তার কাছে কামনার রঙ
সবুজ ছিল তারুণ্যের
আর আকাশ নীল ছিল অভিমানের রঙ ।
আরও যে অনেক অনেক রঙ আছে তা সে মানতোই না ।
আমি বলতাম , ধূসর হল বিষাদের রঙ
আর গোলাপি হল ভালবাসার...
সে হাত নাড়িয়ে বলেছিল , “ যেদিন তুমি আমায় ভালবাসবে
আর আমার চোখের তারার রঙ একটু একটু করে পালটে যাবে
সেদিন তাকিয়ে দেখো , সেটাই হবে ভালবাসার রঙ। “


একদিন তাকে একটা চিঠি দিয়েছিলাম, লেখা ছিল
“তুমি আমার বিকেলে ভোরের ফুল “
চিঠিটা ছিঁড়ে উড়িয়ে দিয়েছিল আমারই সামনে
বড় রাগ হয়েছিল , ঠিক করেছিলাম , আর না ! কক্ষনো না !


কয়েকদিন পরে সটান চলে এসেছিল আমার বাড়ী
কারোর তোয়াক্কা না করেই বলে উঠেছিল, “ ও রকম
ন্যাকা ন্যাকা চিঠি আমার অসহ্য !
পৃথ্বীরাজ হতে পারো না !
ঘোড়া ছুটিয়ে এসে দাঁড়াবে আমার সামনে
বলেই যেমন এসেছিল তেমনই চলে গিয়েছিল ...


সেদিন রাত্রে ঝড় উঠেছিল বাড়ীতে
বোঝাতে পারি নি সংযুক্তা কে !
ক’দিন পরে ফোনে বলেছিল , তোমাকে ভাসিয়ে
নিয়ে যাবার মতন জোর আমার হয়েছে।


সংযুক্তা নিষেধ মানে নি কারো
কখনও সূর্যের তাপের মতন , কখনও বা
মায়ের নরম আঁচলের মতন আমায় জড়িয়ে থাকতে চাইতো ।
মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি বহুবার
কিন্তু সামনে এসে দাঁড়ালেই জীবনের গন্ধ পেতাম
বাঁচার ইচ্ছে হতো , এই ফুরিয়ে যাওয়া জীবনটা ঝলমলিয়ে উঠতে চাইতো ।
সেদিনের পর আর বাড়ীতে কোনোদিন আসে নি ,
তাকে এড়াবার জন্য ব্যস্ততার ভান করতাম ।


মাস খানেক পর কর্মব্যস্ত এক দিনের শুরুতে আপনমনে হাঁটছিলাম
হঠাৎ ই সংযুক্তার গলা চমকে দিল
তাকে দেখেই দ্রুত পালাবার চেষ্টা
বুঝেই সংযুক্তা মরিয়া হয়ে রাস্তা পার হতে চাইল
প্রচণ্ড গতির গাড়ী গুলো থেমে যাওয়ার আওয়াজ
বহু লোকের চিৎকার
জ্ঞান হারাবার মুহূর্তে দেখেছিলাম
চাপ চাপ কামনার রঙে রঙিন হয়ে পড়ে আছে
আমারই সংযুক্তা ...