অজস্র বেদনার ভারে যখন ন্যুয়ে পরে পৃথিবী
ভেসে উঠে ম্নান মুখছবি ;
তখন বিষন্ন শাখায় বাঁধি গান, খুঁজি পত্র-পল্লবে
কখন জেগে উঠবে রবি ।।


ধুলিভরা মলিন গাত্রপরে মন্দমোহের প্রলেপ
কে যেনো ডাকে গভীর প্রণয়ে;
বাজায় সুর সুপ্ত মননে-
বলে, জেগে থাকো নিবিড় প্রত্যয়ে।।


সহসাই জীবনে জেগে উঠে অশান্ত ঢেউ
কেঁপে কেঁপে উঠে চারিধার;
তবুও বজ্রের মত সজোরে আঘাত করি,  
সরাতে চাই দুর্ভোগের পাহাড়।।


যখন মন্দতা ভর করে বাতাসে
অভয়ারণ্য ভরে ওঠে চির সংকটে
প্রলয়নৃতে ধ্বংস হয় নিসর্গশোভা;
তখনও আশায় থাকি,
কখন ধূধূ করা মাঠে বৃষ্টি নামবে
শ্যামল শস্যে হাসবে মনোলোভা।।


অযাচিত ধন যখন পুষ্ট করে প্রাণ
অন্ধকারে কাটে ধরিত্রীর দিপাধার;
তখন স্খলনের দাসত্ব ছেড়ে বহু সাধ্যে
মনুষ্যত্বের পথ খুঁজি অনিবার ।।


যুগে যুগে দানবের রূপে আসে বিকার জনতা
ধর্মের পথ রোধ করে দাঁড়ায় হুঙ্কারে;
তখনও মেঘের গর্জনে নেমে আসে অন্তর্যামী
নিজ হাতে হাল ধরে আকুল পাথারে ।।


হতবুদ্ধির রেশ যখন জীবনে আনে ভ্রান্তি
দুরাশার অন্ধকার চির মন্থর করে গতি;
তখন পরম পূন্যলোকের হৃদয় হতে  
শুনি দৈববাণী- জীবনে আনে জ্ঞানের প্রগতি ।।


অনন্ত তৃষ্ণার ভার লয়ে কেবলই পথ ছুটে চলা
যখন আশ্রয় খুঁজে না পাই নীড়ে;
আত্মদর্পনে দেখি সকলই ভুলভ্রান্তি, মেকি-
পরমাত্মা জেগে ওঠে ধীরে ধীরে ।।


জীর্ণশীর্ণ কাঙ্গালের মতো বেঁচে থাকা
শূন্যতায় খেয়া ভরি, জীবন করি পারাপার;
দিনান্তে অপেক্ষায় থাকি এ ঘোর কাটবে-
ঘুচবে একদিন চির দৈনের আঁধার।।


নিজেরে অনিষ্ট করে যখন নিঃস্ব হয় প্রাণবায়ু
জ্বলে উঠে জীবন আত্মদ্রোহের দহনে;
তারপর ”কোনোখানে নাই নাই সুখ” করে মরি
অবশেষে, মনুষ্যজীবন লভি আত্মনিবেদনে  ।।


সেই জন দূর্গম পথে দিয়েছেন ঢেলে
আকাশ ভরা সূর্য-চন্দ্রের আলো;
সকল লাভের প্রত্যাশা ভুলি
তাঁরেই পথে খুঁজি,
দুঃখ-সুখে সবারেই বেসে ভালো ।।


১৪ নভেম্বর, ২০২০
ঢাকা, বাংলাদেশ।