তুমি ঈশ্বর, পরম শক্তিমান
শুনেছি সমস্ত পৃথিবী ব্যাপিয়া তোমার স্থিতি ;
কিন্তু, আজ বুঝেছি তুমি নেই
কোথাও নেই;
চারপাশ জুড়ে আছে কেবল মৃত্যুভীতি ।।


মাথা খুটতে খুটতে রক্তাক্ত করেছি
প্রবল বৃষ্টির চেয়েও অধিক
জল ঝরেছে দুইচোখ বেয়ে ;
তবুও তোমার দয়া হয়নি এতটুকুও
তাকাও নি, যারা বসে আছে তোমার পথ চেয়ে ।।

কষ্টে কষ্টে আমার নিঃশ্বাস থেমে গেছে বারবার
তবুও তোমার সারা মেলেনি এতটুকুও।
কতটুকু দূরত্বে থাকলে তোমার থেকে
অনায়াসেই বিচ্ছিন্ন হওয়া যায় জানিনা
তবুও আজ আমি তোমায় ছাড়লাম-
তোমার  নাম জপ বদলের সংকল্প নিলাম-
ঈশ্বরের দিব্যি,
ধর্মকাজের সকল ব্রত ভাঙ্গবোই আমি।


জগতের কোথাও তোমার অস্তিত্ব নেই
তুমি নামের কেউ নেই
তোমায় মেনে না নেওয়ার
কঠিনতম সিদ্ধান্তটাই নিলাম।


বিশ্বাসহীনতায় বড় কষ্ট
তবুও সেই বিশ্বাসহীনাকে দৃঢ় করলাম;
যাকে না দেখেও চরণ ছুঁয়েছি
যার এক নাম নিঃশ্বাসে ধারণ করেছি
আজ রোদন ভরা হাহাকারের মধ্যে
আশা হারানো বিষাদ মূর্তিকেই ত্যাজ্য করলাম।


অবজ্ঞা চিরকালই সয়েছি
বারবার উপেক্ষিত হয়েও তোমার কাছে ছুটেছি
নিজেকে স্পর্শ করার আগেই তোমার চরণ ছুঁয়েছি
ফুলের অর্ঘ ঢেলে পূজা করেছি,
গানে গানে মনোরঞ্জন  করেছি তোমার-
আজ  নিরর্থক সব উপাসনা ভেঙ্গে
অনুগত্যের বন্ধন ছিড়ে
তোমার থেকে বিপরীত পথে পা বাড়ালাম।


তুমি ঈশ্বর, সর্বজাতির ঈশ্বর।
শকুনের শরীরে প্রাণ সপেছ-
মানুষেরও।
ওরা আকাশে তোমার স্পর্শ পায়
মাটিতেও।
আমায় আকাশ ছুঁতে দাওনি,
শুধু নিস্ফল চেয়ে থেকেছি রাতদিন
মহাশূন্যের ভীরে তোমায় খুঁজেছি।


আজ তীব্র মহামারী জেঁকে বসেছে শরীর
মৃত্যুর হাহাকারে পাথর পর্যন্ত ফাটে
ভয়ে বন্ধ হয় তোমায় উপাসনার দরজা
তবুও তারই দোরগোড়ায় বসে থাকি গোপনে-
কান পেতে শুনি,
ভিতরে তোমার নিঃশ্বাস নিশ্চিন্তে আসা যাওয়া করে
কি করে সম্ভব??
এত মৃত্যুর মধ্যেও তুমি বেঁচে থাকো কি করে ঈশ্বর?


অন্ধেরও ভক্ত থাকে
আমায় তুমি অন্ধ করে
বিবেকী সত্তায় নিজের আসন গড়েছ
অথচ তুমি বিবেকহীন ঈশ্বরই রয়ে গেছে।
আজ বিবেক সায় দেয়না কিছুতেই
তুমি নেই, কোথায় নেই
বিবেক কেবলই  এটিই বিশ্বাস করতে সায় দেয়।।


১৪  এপ্রিল, ২০২০
বনপাড়া, নাটোর।।