চরম নির্বোধ আর হতচ্ছাড়ি তো আমিই
তাহার ভালোবাসা পাইবার জন্য মরিয়া হইয়া ওঠি!!
তাহার অনুগ্রহ দুই হাত পাতিয়া লই
অথচ ভাবিয়া দেখিলাম, আমি তো দুর্বল নই-
হৃদয় ভরা প্রজ্ঞা, দুই চোখে কত জ্যোতি-
সৌন্দর্য্যও কম নহে!
তথাপি ভাবি, তাহার কৃপায় কেবল
এই সকল আলো সমুজ্জ্বল হইয়া ওঠে ।
আমার সকল অভাব সেই বোঝে-
সেই ভরিয়া তোলে , আমায় বাঁচাইয়া রাখে।
তাহার মুখপানে চাহিয়া থাকিতে বড়ই আনন্দ
অথচ সে তো আমার পানে ফিরাও তাকায়না
তথাপি নিরানন্দের ভাব নাই তাহার মুখে!
তাহাকে ছাড়া আমার দিন কাটেনা
তাহাকে ছাড়িয়া বাঁচিবার কথা ভাবিতেও পারি না
আমার স্বর্ণ যৌবন, সাজসজ্জা সে দেখিল কিনা
তাহা ভাবিয়া বিচলিত হই,
দেহটা যে আমার সেই কথা ভুলিয়াই যাই।
অথচ তাহার বেশভূষা অতি সাদা-মাটা
আমার চক্ষু গোচর করিবার জন্য
বাড়তি কোনো আয়োজন নাই  তাহার শরীরে।
ইহার আবশ্যকতাও নাই বলিয়া সে জানে।
চরম নির্বোধ আর হতচ্ছাড়ি তো আমিই
আমার আর কোনো কাজ নাই তাহার অন্বেষণ ছাড়া!!
নিজের জন্য না ভাবিয়া কেবল তাহাকে ভাবিয়া দিন পার করি
তাহার আনন্দে সুখ করি, দুঃখে রোদন করি।
এমন দুর্ভাগা ও নির্বোধ নারী জাতি আমি
তাহার প্রয়োজনটুকু মিটাইতে পারিলে
আত্মগর্বে বুক ভরিয়া যায়।  
হাত পুড়িয়া রন্ধন করিয়া গন্ধ-রসে তাহার উদর ভর্তি করিলে
নিজের ক্ষুধা ছুটিয়া যায় !
অথচ জগতের সকল সৃষ্টি করিবার পর ঈশ্বর দেখিলেন
নারীকে ভীষণ প্রয়োজন এই জগত সংসারের  জন্য
আর সেই আমি নারী হইয়া, নিজেকে তুচ্ছ ভাবিয়া
তাহার সুখকে নিজের সুখ
তাহার ইচ্ছাকে নিজের ইচ্ছা
তাহার কর্মকে নিজের কর্ম ভাবিয়া
বড় তৃপ্তি লাভ করিয়া, গর্বিত হইয়া
নরাধমে পরিণত হইতেছি দিন দিন!!
কবিতা-
দুর্ভাগা ও নির্বোধ নারী জাতি আমি
কলমে-
বৃষ্টিকাব্য-মিনু গরেট্টী কোড়াইয়া