নারী, তুমিই শ্রেষ্ঠ
======
নারী
তুমি অনন্যা। মহীরূপে সর্বত্র বিরাজ
অন্তহীন উদ্যম সুশ্রী, হও মহীয়ান;
দুরূহ পথে তুমি অগ্রজ, তুমি সেনা
রণক্ষেত্রে নির্ভয়ী, নিক্ষেপে বিষবাণ ।।


বাজাও কঙ্কণ, রাঙ্গাও পদধুলি
তুমি মাতা তনয়া, উচ্ছ্বল হরিণী
তুমি খর্গ তুলে হানো দানবেরে
তুমি চির অম্লান, হও চির রমণী ।।


নারী
উদ্ধত করো শীর, তুমি পর্বত আরোহী
নির্মল রূপে স্থির, প্রসারিত দুই বাহু
শ্রীরামের প্রিয় তণয়া, তুমি দেবী
তুমি নির্ভীক, নাশ করো যত রাহু ।


তুমি সরলা, তুমি চির ধৈর্যে সহিষ্ণু
হৃদে সদা ধরো স্নেহ ভরা প্রীতি
তুমি ব্রতী অক্লান্ত গৃহ সংসারে
ভক্তিভরে হও পূজারী, গাও গীতি ।।


নারী তুমিই শ্রেষ্ঠ !!!!
তোমার স্পর্শে প্রাণ পায় পুরুষ
সবল ক্ষুধার্ত শিশু দুগ্ধপানে
হও নির্ভয় আগুনের রোষে
জাগে কচি বসন্ত সুরেলা গানে ।।


সকল নারীর প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানাই


৮ মার্চ ২০১৮
ঢাকা।


*** সব দিন হোক নর ও নারীর ***
আজ সারাদিন সভা সমাবেশ, মিছিলে উত্তাল রাজপথ
নারীকে নাকি দেবে সম্মান, সকলে করছে শপথ ।।
যেই নারীটি রাতভর দিন, সংসারে খেটে মরে
তার কথা কি বলছে তারা, শব্দে আর অক্ষরে !!
নারী বলে সংসারে যার, পূর্ণ হয়না সাধ
আজ কি হবে ফুরাবে ক্লান্তি, ঘৃণা আর অপবাদ !!
যার আদরে সকলে ঘুমাই , রাত জাগে যে আখি
আজকে তারে মন ভরাতে, ডাকবে কি কোন পাখি !!
নারী হল সংসার বতী, গভীর মায়ার আধার
তার মনেতে আশার আলো, জ্বালাবে কে এবার !!
আজকে দেখ বাজছে সভায় , বজ্র কণ্ঠের ধ্বনি
কেউ তো এসে দুঃখি মেয়ের , মুছেনি চোখের পানি ।।
সভা সমাবেশ ছেড়ে এস, সেই মেয়েটির ঘরে
সংসারে যা নিত্য দাহে, অন্তর দেহ পুড়ে ।।
নারী অধিকার করতে দাবী, নেমেছ পথে যারা
নিজের ঘরেই হয়তো কেউ, নিরবে কাঁদে সারা !!
একদিন শুধু নারীর জন্য, বাকী সবদিন তোমার ?
সবদিন হোক নর ও নারীর, অঙ্গিকার হোক এবার ।।


৮ মার্চ ২০১৭।


.....সাহসী নারী ......
আমি সাহস করে প্রতিদিন তোমার সামনে এসে দাঁড়াতে চাই
শুধু বলতে চাই আমিও একজন মানুষ, নই তো শুধুই নারী ;
তোমার পথে আমি ধুলো হবো, পথের পাশের ফুলও হবো
আমি সাজাতেও পারি তারা ঝলমল নক্ষত্রের এক বাড়ি ।।


আমি চাঁদ হয়ে উত্তাপ দিই শীতের রাত্রে উলঙ্গ ছেলেটি গায়ে
রোজ একটি চিঠি গুজে দিই কাগজ কুড়ানো মেয়েটির হাতে ;
আমি পথের পাশে অলসে ঘুমিয়ে থাকা পথিকের পাশে ঘুমাই
পথ চলার জন্য আবারও তাকে জাগিয়ে ডেকে লই প্রভাতে।।


সাহস করে আমি প্রতিদিন বলতে চাই, আমিও তো মানুষ
রৌদ্রতাপে যখন পুড়ায় দেহ, যখন নিঃস্ব হয়ে পড়ে রই ধুলিতে
নিমেষেই খসে পড়ে আমার ভয় আর নিরবতার আবরণ
তখন আমি বৃষ্টি হই কলুসতায় ছেয়ে যাওয়া বিভৎস নগরীতে ।।


আমি জোনাকির সাথে ক্ষীন আলো জ্বালি চাঁদঢাকা রাতে
বিহঙ্গের মত নেচে বেড়ায় আমার সকল উচ্ছলতা
আমি গান গাই আর ঘুমঘুম চোখে জাল বুনি হাজার স্বপ্নের
সবুজের মায়া বিছিয়ে দিই যেখানে ঝরে শুকনো পাতা।।


যখন আমি অন্ধকার অলিগলিতে বাজিয়ে যাই বিষের বীণ
সারি সারি দল বেধে ছুটে আসে ঘুমন্ত নগরীর নারীরা সব
পথে ওৎ পেতে থাকা শকুনেরা ভয়ে বন্ধ করে ঘরের কপাট
আমার নির্জন পৃথিবী সহসাই জেগে উঠে, জাগে কলরব ।।


আমি ক্ষুধার্ত শিশুর মুখে তুলে দিই পূর্ণিমার ঝলসানো রুটি
আমি শুনাতে পারি বৃষ্টির গান অভিমানে মেঘ জমা আকাশে
শীতের মৌসুমেও শ্রাবণের মেঘ ঢালি তৃষ্ণার্ত পাখির ঠোঁটে
আমি পলাশ শিমুলের গন্ধ বিলাই রোজ বসন্তের অবকাশে ।।


আমি এমনি করে প্রতিদিনই তোমার সামনে দাঁড়াতে চাই
বলতে চাই আমি শুধুই মানুষ নই, আমি সাহসী এক নারী
পাথুরে বুকে ফুল ফোটাতে জানি, ভাঙতেও জানি অভিমানে
আমি দুর্দিনে হতেও পারি তোমার একলা পথের কাণ্ডারী ।।


৮ মার্চ, ২০১৭


তুমি নারী, জগত জননী
- মিনু গরেট্টী কোড়াইয়া (বৃষ্টিরানী)
তুমি নারী, জগৎ জননী
নও তুমি নির্বোধ;
ভাঙ্গো বেড়ি, উঠাও তরবারি
করো পাপ প্রতিরোধ ।।


রাখো ধৈর্য- হও সহিষ্ণু
অস্ত্র হাতে হও দুর্জয়;
থাকো অবিচল, থাকো নির্মল
ভোলো সকল সংশয় ।।


হও দরদী- রও বিনীত
হও অন্তরে বিশুদ্ধ;
থাকো নির্দোষ,
করো অসুরের বুকে তীর বিদ্ধ ।।


তুমি স্রোতের মত হও বহমান;
হও ঢেউয়ের মত উচ্ছল-
রও পুষ্প রূপে শোভাময়
ধরে রাখো চির সম্মান ।।


হও ঝরণার মত স্নিগ্ধ
থাকো পাহাড়ের মত অবিচল;
তুমি সবুজের মত মায়াময়
মরুতে তৃষ্ণার জল ।।।


তুমি নারী, না হও পতিত-
রাখো শির সদা উন্নত;
জাগো বজ্রকণ্ঠের বাণী
শত লাঞ্ছনায় হইও না নত।।


মিনু কোড়াইয়া-বৃষ্টিরানী
১৩ আগষ্ট ২০১৮
ঢাকা, বাংলাদেশ।


নারী
- মিনু গরেট্টী কোড়াইয়া (বৃষ্টিরানী)
নারী
======
উচ্চ শিরে বাঁচুক  নারী সবার ঘরে
তারাই স্নেহের জগত মাতা ভক্তি মতি ;
হেলায় ফেলায় আর করোনা ভগ্ন তারে
এই সমাজে নারীর জীবন মূল্য অতি ।।


রুখতে পারে সকল বিপদ নিজের হাতে
অন্ধকারে রাখতে পারে প্রদীপ জ্বেলে ;
নিজের জীবন উজার করে দেয় সহজে
চোখের অশ্রু আড়াল করে দুঃখ পেলে ।।


বাল্যবিয়ের কুফল যেনো না ছোঁয় তারে
সবার মনে উঠুক জেগে এই চেতনা
তারই শিক্ষায় আলোকিত হবে সমাজ
ঘুচিয়ে দেবো অজ্ঞানতার সব বেদনা ।।


সংসারেতে ধরবে সে হাল শক্ত হাতে
দারিদ্রতার অভিশাপে পুড়বে না ঘর
জ্ঞানার্জনের একটু সুযোগ দিও তারে
সামলে নেবে সামনে যত আসুক না ঝড় ।।


মুছে ফেলো কুসংস্কার আর অন্ধ প্রথা
দাও জ্বালিয়ে জ্ঞানের আলো সবার মনে
অকাল দ্রোহে আর যেন না মরে নারী
আর যেনো না কাঁদে নারী সংগোপনে ।।


যতই থাকুক সংসারেতে দারিদ্রতা
রুখবে যত পথে বাধা, অসংগতি
কর্মগুনে বদলে দেবে ভাগ্যটাকে
দেখবে কত অদম্য এই নারীজাতি।।


অবহেলার দিন ফুরাবে আসবে সুদিন
মুছে যাবে আমানিশা বুকের ক্ষত
ঊর্ধ্বশ্বাসে পারে নারী আকাশ ছুঁতে
সুযোগ পেলে রুখবে নারী যুদ্ধ যত ।।


“বাল্যবিয়ে” আর যেন না হয় অভিশাপ
জাগুক নারী, বন্ধন থেকে হোক মুক্তি
আর রেখনা অজ্ঞানতার অন্ধকারে
আলোর দিকে চলুক  নারীর ধীশক্তি ।।


৬ আগষ্ট, ২০১৭।



অধিকার ভোগের প্রতিজ্ঞা
======
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে-
নারী সংগঠনের কর্মকর্তৃরা সবাই
নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায়-
মানববন্ধন, র‌্যালী, সমাবেশ-
মহা আরম্বরের সাথে পালন করতে
অফিসের কাজ ফেলে পথে নেমেছেন।।
তারা সবাই স্বাবলম্বী-এই অর্থে-
তারা সবাই যার যার সংসারে স্বাধীন-
শুধু অধিকার ভোগ নয়, সেই সংসারে -
এমনকি অফিসেও বরাবর
রাজভোগ করেই তাদের দিন চলে ।।
যাদের রেখে গেছেন অফিস সামলানোর দায়িত্বে
সেই নারী কর্মীটি সংসার আর
অফিস সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে-
এমনকি ঘুম থেকে তার স্বামী তাকে
মধুর সুরে ডেকে তোলার বদলে কিনা
লাথির আঘাতে তার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিল।।
অসহায় এ্র্ই নারীটি ভাগ্য বদলে দেবার মতে
কতটুকু সহযোগিতা পেয়েছে এই নারী সংগঠন থেকে?
যারা আজ ব্যানার হাতে পথে নেমেছেন
তাদের সব অধিকার ভোগের সুযোগ আছে বলেই
তারা পথে নামার সাহস দেখিয়েছেন।।
কিন্তু যে নারীরা ঘরে বঞ্চিত-অবহেলিত
নির্যাতিত- একবারও কি সেই নারীর দরজায়
দাড়িয়ে বর্বর পুরুষটিকে টেনে হিচড়ে
ঘর থেকে বের করতে পেরেছেন?
বলতে পেরেছেন এই কথাটি
“আর নয়, এবার তুমিও চিৎকার করে
বল- পৃথিবীর সকল নারী-সকল পুরুষই মানুষ”।
অথবা, যে মেয়েটি পথে নেমে
লালসার দৃষ্টিতে পুড়ে মরছে
সেই কুদৃষ্টি ধারকের চোখ দুটো
উপরে ফেলে দেবার জন্য
সাহসী কোন নারী কি
নিজে রাস্তায় দাড়িয়েছেন?
সৃষ্টিকর্তা নারী-পুরুষের যে বৈষম্য তৈরী করে দিয়েছেন
এর বাইরে আমারা ভীন্ন কোন বৈষম্য তৈরি করে
সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকে অপমান করতে পারি না।।।
অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই আর নয়-
অধিকার ভোগের প্রতিজ্ঞা হউক-
সকল নারী-পুরুষের অন্তরে অন্তরে।।
08.03.2015