রও চির অক্ষত
========
এখানে দীঘির জল স্বচ্ছ টলমল
ঘাসের উপর জমে থাকে কুয়াশার হীরক বিন্দু;
এসো নির্ভীক, পরাক্রান্ত, ছড়াও উচ্ছ্বাস
এখানে গড়ো অমৃত রসে ভালোবাসার সিন্ধু।।


এখানে প্রগার মুরতি দশদিক নিরীক্ষে,
তুলে দেয় দন্ড অসুরের কাধে ;
পরিত্যাক্ত কুটিরে কাঁদে অসহায় নরনারী
তারে বুকে তুলে লও, যারা নীরবে কাঁদে!!


পৃথিবীর অরণ্যে খুঁজে দেখ ব্যাথার অনুভব
লুকায়িত আছে নীল চাষীর ক্রন্দন কোন্ গভীরে ;
হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখ উষ্ণতা আর কম্পন
কতটা কষ্ট বহে ঝরা পাতার শুকনো শরীরে !!


চাঁদের আলোয় তারা ঝলমল সমুদ্রে
সাঁতার কেটে কত রাত করেছ যে পাড় ;
দেখ নাই ঝারবাতি কখন ডনিভে যায় ঝড়ে
আকাশের নিচে তার কেবলই অন্ধকার ।।


বৃক্ষের ছায়াতলে বসে বাজালে অপূর্ব বাঁশি
দেহ জুড়ালে ক্লান্ত দুপুরে সুখের তন্দ্রায় ;
দেখলেনা উড়ে গেল পাখি প্রিয়ার খোঁজে
পল্লবেরা কাঁপে থরথরে ঝড়ের বেদনায় ।।


তীরে বসে কেবলই রচেছো কত কবিতা
শুনলে না কতটা ভার বয়ে চলে শুকনো নদী;
রৌদ্রে তাপে জানো কি পোড়ে মাঝির নাও
আকাশ জুড়ে বর্ষা আসার অবধি ।।


ধূলো মেখে ফসলের গন্ধে বুক ভরে লও
কাঁদা জলে পরশী বধু আদরে দুহাত রাঙ্গায়;
মাটি খুড়ে দেখনি, বিধ্বংসী লাভার সন্ধান
চিরচেনা বিশ্ব তোমার কেঁদে উঠে পরাধীনতায় ।।


এসো নবীন তুলে ধরো অরাজক পৃথিবীকে
হও শাসক, রাজহীন আসন রাখো দখলে;
রুক্ষ মরুতে শুনাও বৃষ্টির হিমেল গান
জ্বালো মঙ্গলদীপ, ন্যায়ের কাণ্ডারী হও সকলে ।।


হও কুণ্ঠাহীন, ভীরু সত্তাকে জাগাও আজ
করো জাগ্রত বিশ্ব, শত পীড়নেও রও অনাহত;
দেখাও স্বর্ধা অশুরের সম্মুখে, না হও দমিত-
বিধ্বংসী যুদ্ধেও থাকো চির সবুজ-
থাকো চির অক্ষত ।।


মিনু গরেট্টী কোড়াইয়া


৩১ মে, ২০১৮
ঢাকা, বাংলাদেশ।