তোমার বুক চিঁড়ে যে রক্তের বন্যা বয়ে গেছে
তারই উর্বরতায় মাটিতে ফোটে শত ফুলদল
পাখপাখালী উড়ে বেড়ায় ফুলের সৌরভ মেখে
ওরাও গান গায় বাংলার, হয়ে ওঠে উচ্ছল ।।


সূর্য্যের কিরণ নেচে বেড়ায় উঠুন জুড়ে
শ্রাবণের বৃষ্টি ছুঁয়ে যায় রক্তমাখা ভূমি
বাউলের একতারা গান বাঁধে বাংলায়
ভালোবেসে যে বর্ণমালা গেঁথেছ তুমি ।।


ঘুম পাড়ানী গান গায় মা পরম মমতায়
ঘুমভাঙ্গা চোখে দেখি প্রথম মায়ের মুখ
আদরমাখা বুলি ছড়িয়ে থাকে চারিদিকে
মা বলে ডাকি বারবার, ঝরে অনাবিল সুখ ।।


তারায় তারায় সেজে থাকে গোধূলি বেলা
সব রঙ নিয়ে তখনও শিশু খেলা করে নির্ভয়ে
প্রাণ খুলে গায় বাংলায়, সাঁঝের যত গান
ওরা বাঁচে সুখে, বড় হয় বর্ণের বলয়ে ।।


বুকের রক্ত দিয়ে লিখেছ যেই মধুর বুলি
পাতা ঝরার শব্দেও বাজে সেই সুর
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি
ছড়িয়ে যায় সেই ধ্বনি, দূর থেকে বহূদূর ।।


দক্ষিণের বাতাস বয়ে যায় শনশন ছাড়িয়ে মাঠ প্রান্তর
রাখালি ছেলে বাঁশিতে সুর তুলে, কি যে সুমধুর
বৃষ্টিমাখা ভেজা মাটির গন্ধ দুপায়ে জড়িয়ে
বর্ণমেলায় নেচে বেড়ায় খুকি, নুপুরে তোলে সুর।।


রক্তের মধ্যে মিশে আছে আমার সাধের বর্ণমালা
ওরা বাংলায় হাসে-কাঁদে, সাজায় কবিতার অক্ষর
ওরা জেগে থাকে ছেলেহারানো মায়ের কোলে
আগুন মশাল জ্বেলে সোচ্চার অন্যায়ের বিরুদ্ধে
করে অনশন রাতভর ।।


কি দিয়ে আর করি প্রকাশ বর্ণমালার সুখ
যে সুখে লুকিয়ে আছে জীবন দানের প্রীতি
আমি তাদের দানে বাঁচি, বাংলাকে ভালোবাসি
লিখি তাদের কথায়-সুরে  জীবনের জয়গীতি।। ।


রচনাকাল : ২০২০ সাল