কবিতা:  তবুও শান্তি বেঁচে থাকার


সংসার মাঝে দুঃখ আসে, হতাশায় জমে মেঘ
দুঃখের পরে সুখও আসে, জাগে আনন্দ-আবেগ।
বৃষ্টির পরে রঙধনু হাসে, সরে না বজ্রঘাতে
রাত্রি যতই হোক না কালো, স্বপ্ন এসে মাতে ।
দুঃখ ছাড়া বেঁচে থাকার, কিইবা আছে মানে
রাতের পরে প্রভাত আলো, ঝিকমিক করে প্রাণে।
কত যে দিন রাত্রি পোহায়, কাঁদি বিরহ-রাগে
ফাগুন স্পর্শে শুকনো শাখায়, নতুন কুঁড়ি জাগে।
মন যে কাঁদে ভ্রান্তি পথে, বিচিত্র পিপাসায়
নানা পথ ঘুরে সুখও আসে, অমৃত বরসায়।
থাকুক দারিদ্র, অভাব-অনটন, পিপাসা দুঃসহে
ফুলের ঘ্রাণ, বাতাসে প্রাণ, তবুও জীবনে বহে।
নিত্য নতুন বাসনা মোহে, কেবলই খেদ বাড়ে
যেটুকু পাই দীপ্ত সুধায়, থাকুক মনের দ্বারে।
তীব্র শোক করে পরিহার , আনন্দে সবে মাতি
দুঃখ ধ্যানে মাদুর পাতি, বর্ণমালায় গাঁথি ।
ঝরুক প্রাণে বেদনা-যাতনে, অশ্রু রাশি রাশি
সুপ্ত বাসনা, বিরহ ভুলে, জীবনকে ভালোবাসি ।।
ঝরা ফুলের হয় যে মালা, মন্দিরে পায় ঠাই
সকল দুঃখ মিলায়ে এসো, ভজনা গীত গাই ।
প্রাপ্তি বিপুল-দেবতার আশিষ, হই জগতে সেরা
না থাকুক বিপুল ধন, থাকুক, প্রেমে বাঁধানো ডেরা ।।
আঁধার দূর্গ সরায়ে দূরে, প্রাণ যাক হেসেহেসে
তবুও শান্তি জাগুক প্রাণে, বাঁচি সবে নম্রবেশে ।।
সংসার যজ্ঞে সাজাই অর্ঘ্য বেদন পুষ্পে যতনে
নম্র বাসনা বক্ষে জড়ায়ে বসি শান্তি সদনে ।।
তীব্র শোকে না করি মাতম, ঝঞ্ঝায় দিশেহারা
দুঃখ-সুখ ফিরে ফিরে আসে, এমনই নিত্য ধারা।
থাকুক ক্লান্তি,অভাব-পীড়ন, থাকুক দুঃখ ভার
তবুও শান্তি, বেঁচে থাকার- এযে বিপুল সম্ভার ।।


২৭ অক্টোবর, ২০২১