ছোট্ট একটা ঝুল বারান্দা,
ঠিক রাস্তার উপরে ঝুলে আছে।
ওখানে রাখা হাতলওয়ালা চেয়ারটা,
আমার জন্যে অপেক্ষা করে,
রাত গভীর হলে আমিও বসে যাই,
বসে যাই সমগ্র ভাবনা চিন্তা নিয়ে!
আজ বৃষ্টি হচ্ছে খুব,
শহুরে কুকুর গুলোর কোন আওয়াজ নেই,
বৃষ্টি না থাকলে দেখা যেতো তাদের হিসাব নিকেশ,
রাত গভীর হলেই তারা পাড়া ধাপিয়ে বেড়ায়,
দিনের বেলা মানুষের ভীড়ে তাদের দেখা মেলা ভার!
রাস্তার বাতিগুলো ভিজে একাকার,
কোথাও কোন শব্দ নেই,
না কুকুরের না মানুষের!
শুধু বৃষ্টির শব্দ,
শহুরে রাত।
রাস্তার আলো চাঁদকে ম্লান করে দেয়,
বৃষ্টি হলেতো কথাই নেই,
মেঘের আড়ালে লুকোচুরি খেলে!
খুঁটির মতো দাড়িয় থাকা বাড়ি গুলো ভীষণ অন্ধকার!
মাঝে মধ্যে সম্মুখে একটা রুমে আলো জ্বলে ওঠে,
ভেসে আসে শিশুর আওয়াজ!
কান্নার আওয়াজ,
সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটি হয়তো
পৃথিবীর সাথে খাপখাওয়াতে ব্যার্থ চেষ্টায় কেঁদে ওঠে।
দেখতে দেখতে গভীর হয় ঝুল বারান্দায় বসে থাকা রাত,
আর রাতের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে আমার বয়স!
ফুড়িয়ে আসে আমার অগুছালো দিন রাত!
ভাবনায় ডুবি,
এই শহুরে রাতের নিরবতায় বয়সের বাড়ে গৃহবন্দী মানুষকে নিয়ে।
ভাবি অনাগত বার্ধক্য,
আর এই তারুণ্য ও কত কি?
এই উদ্যামতা এই উদাসীনতা,
কতজনকেই না গ্রাস করেছে!
দিয়েছে আনন্দ,
কতজনকেই না নিয়ে গেছে অন্ধকারের কাছাকাছি!
আর কতজন,
কেদে ওঠা শিশুর মতো খাপখাওয়াতে ব্যার্থ হয়ে
হারিয়ে গেছে,
কিংবা কুকুরের মত বৃষ্টি দেখে গুটিয়ে নিয়েছে নিজেকে।
কতজন এমন ঝুল বারান্দায় বসে বসে হিসেব করছে,
পাকা চুলের সংখ্যা।
কেউবা মুগ্ধ হয়ে বিভোর আছে বৃষ্টির সৌন্দর্যে,
আরো কত কি?
কোথাও হয়তো এখন সদ্য মৃতের পাহাড়ায় আছে
টকবগে যুবক!
কিংবা কেউ এগিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর দিকে!
এই বৃষ্টির শব্দে কেউ হয়তো,
ছক কষে এগিয়ে যাচ্ছে অনাগত সুখের দিকে।
আমি ভাবি কত কি?
কুকুর থেকে মানুষ!
আরো কত কি নিয়ে?
শুধু অবসর পেলাম না,
নিজেকে নিয়ে ভাবার।
হয়তো মানুষ কিংবা কুকুর কিংবা অন্য কিছুতে পরি না?
তাই আমার ভাবনায় আসি না আমি!
ভোর হয়ে আসে রাত,
বৃষ্টিতে ভিজে যে বৃদ্ধ যায় মসজিদে,
সেও কি ছিলো আমার মতো?
উন্মাদ, বাউন্ডুলে, খুদাকে ভুলে?
তার যৌবনে!!