অপেক্ষায় কেটেছে গুচ্ছ গুচ্ছ শীতাতুর শীতকাল.....


খেয়ালের বশে শিশির মাখা গমের শিষে অনন্বিত লোলুপ লেহন নয়, পুষ্পের পেলব পাপড়ি চুইয়ে পড়া একফোঁটা শিশিরের জন্য অপেক্ষা সারারাত্রি.....মেঘের উৎপীড়নে সহসাই পাইনি নক্ষত্র সঙ্গ, দূরাগত আলোর অহংকার ব্যথার নিনাদ তুলেছে বুকে! জোনাকির মায়াজ্যোতি চোখে বুলিয়ে আদর ভুলিয়েছে কিছু ব্যথা, অন্ধকারে ঝিঁঝির বাগেশ্রী শুনে শুনে অপেক্ষায় কেটেছে প্রহর, শ্বাসক্ষেত্রে পড়েছে হিমালয়ের জঙ্ঘা ছিঁড়ে আসা কুয়াশার বিষম পলি!  


অপেক্ষায় কেটেছে গুচ্ছ গুচ্ছ শীতাতুর শীতরাত.....
অপেক্ষায় কেটেছে গুচ্ছ গুচ্ছ শীতাতুর শীতকাল.....
অপেক্ষা আরো....


ঢাকা।
০৪ জানুয়ারি, ২০১৫


শীত সহবাস


পৌষের রাতে বালিশে ছড়িয়ে কেশদাম, নিরর্গল সর্বস্ব বিছিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকে শীত! কখনও মাঝরাতে, কখনও শেষরাতে বিছানায় যাই, মশারি খাটাই।
বিছানায় শুতেই অপেক্ষারত শীত ক্ষ্যাপা পাগলীর মতো জাপটে ধরে। নখ বিঁধে যায় পিঠে! কম্বল টেনে উষ্ণতার ভয় দেখাই, তবু এখানে সেখানে শীত ঘাপটি মেরে থাকে। পাশ ফিরলেই জড়িয়ে ধরে।


সারারাত্রি কাটে কামনার গন্ধহীন গুচ্ছ গুচ্ছ শীত সহবাসে!


ঢাকা।
০৩ জানুয়ারি, ২০১৫


প্রনষ্ট হয়েছে আমার নিরন্তর নিবিড় পর্যটন!      


মাতৃস্নেহের মতো পৌষের বিকেলের রোদ্দুর যত্নে মাখি মাথায়, বুকে-পিঠে আর মানুষের ভেতরে খুঁজতে গিয়ে পৌষের রোদ্দুর থমকে যাই, চমকে যাই!
শরীরের প্রবাহে গ্রীষ্মের উদ্ধত দুপুরের স্পর্ধা আর ছলনাময় ভাদ্রের রূপ দেখে মানুষের ভেতরে-বাহিরে, নিজেকে নিয়েছি গুটিয়ে শামুকের মতো।  
তবু মানুষ ভালবাসি মানুষের মতো...


প্রেয়সীর প্রেমময় আঁচলের মতো হলুদ শর্ষের ক্ষেত, শিশির ধোয়া স্বচ্ছ নদী আর পৌষ সংক্রান্তির উঠোনের আলপনা খুঁজতে গিয়ে তার হৃদয়ে....খুঁজে পেয়েছি ছায়াময় সন্ধ্যা, আরো গভীরে গহীন অন্ধকার, কালো পাথর...


প্রনষ্ট হয়েছে আমার নিরন্তর নিবিড় পর্যটন!      


ঢাকা।
০৩ জানুয়ারি, ২০১৫


ফিরিয়ে নাও তোমার কাল্পনিক পশমি মায়াকম্বল


ফিরিয়ে নাও তোমার কাল্পনিক পশমি মায়াকম্বল। চাই না ছলনার উষ্ণতা। তপ্ত কয়লার চেয়ে শীতল বরফ আমার একটু বেশিই প্রিয়।
আমি শীত সহবাসে কাটাবো শীতাতুর রাত্তির। জীবনের অনাগত শীতকাল.....


ঢাকা।
০৩ জানুয়ারি, ২০১৫


শিশিরের তুর-পুন


আকাশতলায় একলা জোছনায়
এই মায়াবী নির্মল শিশির নয় ভালবাসার ধুন,  
নিঃসঙ্গ প্রহরে, নিঃসঙ্গ হৃদয়ে এই শিশির
সুবোধ মিস্ত্রীর কর্মঠ হাতের নির্ভুল তুর-পুন!


ঢাকা।
০৯ জানুয়ারি, ২০১৫


শিশিরের স্তনন


কুয়াশার কারুকাজে লূতাতন্তুতে গাঁথা সীতাহার থেকে মুক্তোর মতো খসে পড়ে, প্রাণবন্ত বৃক্ষপত্রে জলো চুমু খেয়ে ঝরে পড়ে তলার বিরাগী পাতায়, পুকুর আর জলার কিনারে.....পৌষের মিঠে অঙ্গে সারারাত্রি জুড়ে শিশিরের নিস্তন্দ্র নিস্পৃহ রমণের স্তনন শুনে শুনে বিস্রস্ত হয় হৃদকুঞ্জের মৌনতা।


হৃদচরা পাখিটা আতি-পাতি করে কিছু খোঁজে....ডানা ঝাপটায়।
শিশিরের স্তনন শুনে উড়ে যেতে চায়। কোথায়.......!          


ঢাকা।
০৯ জানুয়ারি, ২০১৫


শীতের রাতের কবিতা


গোপনে আত্মরতির খেলায় মেতে
যতই সম্ভোগ সুখ খোঁজো
অপর লিঙ্গের শরীরের উত্তাপ কোথায় পাবে
এই শীতের রাতে!


ঢাকা।
জানুয়ারি, ২০১২