জীবন বিবর্তনের প্রতি সোপানে তোমার স্বহস্তের আলপনা,
তোমাকে হারিয়ে তোমারি মাঝে বেঁচে থাকা,
তোমার স্মৃতির সরণীতে খুঁজে ফিরি আমার চলার পথ,
তোমার গ্রহণ, ধারণ, প্রতিপালন, সান্নিধ্য, উষ্ণতা,
সব কিছু মিলেমিশে আমার পূর্ণ অবয়বে ছুঁয়ে থাকে তোমার কল্পনা।


তোমায় খুঁজে ফিরি আনন্দ, দুঃখ, যন্ত্রণার ত্রি-ধারায়,
একদল ছোট ছোট মেয়ে বেণী দুলিয়ে,
ভোরের মেঘ, রোদ মেখে যখন চলে শিক্ষার আঙিনায়,
তাদের স্বপ্নিল চোখে দেখি তোমার তৃপ্ত মুখছবি।
একটি নিষ্পাপ অঙ্কুর যখন চোখ মেলার আগেই
খুন হয়ে যায় মাতৃজঠরের নিরাপদ আশ্রয়ে,
সেই কন্যা ভ্রূণের বোধহীন শরীরে তোমার অসহায় ছায়া।
দোয়েল, শ্যামা, বুলবুলিরা যখন ডাক দেয় ভোরের বকুল, শিউলিকে,
মহানগরীর আলোকিত রাজপথ মুখ লুকায়
সদ্য কিশোরীর বেআব্রু শরীরের সনাক্তকরণের ঘৃণায়,
অথবা বর্বরতার শিকার কোন বৃদ্ধার স্তব্ধ বিবর্ণ মুখের,
অব্যক্ত গোঙানিতে শুনি তোমারি মুখের আর্তি।
নির্বাক রাতের আঁধারে যখন আমি নিঃশ্চুপ,
আত্মস্থ প্রকৃতি আমাকে তোমার গান শোনায়।


ভোরের আলো মেখে  আমার মা দাঁড়িয়ে আছেন,
জীবনের মাঝে, মৃত্যুর সাথে, সংগ্রামের শপথে,
বৃষ্টি ভেজা গন্ধরাজের হাসি ছড়িয়ে আমায় ছুঁয়ে বলেন,
হারিয়ে যাই নি তো, এই তো আমি আমার আত্মজার মননে।
মা তোমার শাড়ীর হলুদ গন্ধে সহিষ্ণুতার সুর,
কোন অজানার আলো-ছায়া-পথে চলে গেছ বহুদূর।