ছোট্ট মেয়ে তিন্নি,
আজ সে কারো ঘরনী গৃহিনী.
স্বামী তার কর্মরত বিদেশে,
ন মাস ছ মাসে একবার
ফেরে সে দেশে.
স্বামী বিনা তিন্নি,
একা শ্বশুড় ঘরে,
উঠতে বসতে লাঞ্ছনা গঞ্জনা,
শুনতে হয় তারে.
সম্মুখে স্বামীর,
করে মিছা আদুরী প্রর্দশন সবে,
যেন;মাথায় রাখলে উঁকুন,
আর মাটিতে পিঁপড়ে ই খাবে.


বছর ঘুরতেই তিন্নি,
আনে সুসংবাদ;
মাথা ঘোরা বমি বমি,
মুখে একটু অরুচির ভাব.
টক ঝাল আচাড় তার ভারী পছন্দ,
এ সব দেখলেই তার ; জিভে আসে জল
আর মনে হয় আনন্দ.


আবার এই দিকে শ্বশুড় মশাই
শুনিয়েছেন বানী,
প্রথম বংশধর হবে এই ভিটাতেই
বাপের ঘর যাবে না ঘরনী.
মাথা নীচু তিন্নি,
শুধু শোনে তার আদেশ,
নির্বাক রহে সে;করে না উত্তরের লেশ.


আবার ওই দিকেতে
ডাক্তারবাবু দিয়েছেন নির্দেশ,
খেতে হবে বারবার আর চাই ঘুম
আর বেড রেস্ট.
তাই শুনে শ্বাশুড়ি মা,
বলেন কর্কশ সুরে,
আ: মল যা!
এত খাই খাই কিসের?
বাপ;দিয়েছে খাট বিছানা,
তাই কি এত রেস্টের বাহানা?
আর তো হয় নি কারো ছেলেপিলে,
শুধুমাত্র আসতে চলেছে ,
একমাত্র তোমার ই কোলে!


ছিল ;আমাদের সেই সময়,
কুটনো কেটে বাটনা বেটে,
গেছি আতুড় ঘরে.
এ সব লাটসাহেবি ,
হবে না এ বাড়িতে,
এসব করতে যাও বাপের ঘরে.


নির্বাক তিন্নি,
অশ্রুঝরা দুনয়ন,
পুরানো স্মৃতি করে সে রোমান্থন.
যেন,ভেসে আসে -
আদুরে মেয়ের প্রতি
বাবা মায়ের সে কথন-
এইটুকু খেয়ে নে মা,
আর রাগ করে থাকিস না.


আজ আর বলেনা কেউ
এমন করে,
এখন খেতে বসলেই ,
শুধু খাবার খোটা ধরে.


দেখতে দেখতে তিন্নির
বাড়ে প্রসব যন্ত্রনা,
এক টি বার স্বামীকে দেখার
করে আকুতি মিনতী প্রার্থনা.


অবশেষে তিন্নি,
জন্ম দিল এক তনয়া,
কিন্তু সব আশা বুকে নিয়ে,
তিন্নি ছাড়ল পৃথিবীর মায়া.
এইভাবে হল তিন্নির
জীবন শেষ,
ছোট্ট আদুরে মেয়ের আর
রইল না অবশেষ.