ফটিক বাবু চাকরি নিয়েছে,
পুরুলিয়ার ওই গঁায়ে.
পেশায় তিনি শিক্ষকতা করেন,
একা ই থাকেন তিনি,
গঁায়ের এক চালার
ওই ভাড়ার ঘরে.
ফটো তোলার তার ; ভীষন সখ,
মাঝে মাঝে ফটো তোলে,
যখন হয় সুজোগ.
রবিবার টি এলেই,
ভাতে ভাত খেয়ে
ক্যামেরা নিয়ে দিতেন পাড়ি,
ব্যাচেলর মানুষ তো
কোনো ভাবনা নেই,
সংসারের সঙ্গে এক্কেবারে আড়ি আড়ি.
কত কী  যে বন্দি ক্যামেরায়,
পাহাড়, গাছ পালা , নদী ,পাখী
সবই যেন তার মন খারাপের সাথী.


ছবি তোলার তালে;ফটিকবাবু,
পাহাড়িয়া ওই পথ ধরে
পৌঁছে যায় এক; পাহাড়িয়া গঁায়ে.
সেথায় সেদিন পরব ছিল,
ধামসা মাদলের বোল, নৃত্যের তাল
সে যেন এক , মন কেমন করা উত্তাল.
হঠাৎ ই কানে ভেসে আসে এক
ভীষন অট্টহাসি;
পিছু ফিরে দেখেন তিনি
এক পাহাড়িয়া মেয়ের দল
তাদের মধ্যমনি হলুদ শাড়ি,
মাথায় পলাশ এলোকেশী,
চোখ দুটো যেন বন্ধনহীন হরিনী,
যেন এক মায়ামনোবিহরিনী.
কোথায় যেন হারিয়ে যায় সে,
এই কী তার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যে?
যে পক্ষীরাজের ঘোড়ায় চেপে
নিত্য আসে তার কাছে.
সব যেন এলোমেলো
কোথায় যেন সে হারিয়ে গেল,
সুতো কাটা ঘুড়ির মত সে চঞ্চল,


সম্বিত ফিরে দেখতে পায়
সামনে দঁাড়িয়ে সেই মেয়েদের দল,
বলে ওঠে,"ইয়ে বাবু ওমনি কইরে কী দেখছিনস বটেক",
হামাদের কী সরম টো লাগে নাই?
গলায় তুহার ওই টা কী?
ফটিক বলেন , ক্যামেরা.
ওইটা কি করে বটেক ?
ফটো তোলে,
তুল না  কেনে একটো ফটো,
সেইবার ওই
বড়লোকের ব্যাটারা সব
চড়ুই ভাতি তে আইসে
আলো জ্বেলে
ওই যনতর টা দিয়ে
ফটো তুলছিল হাইসে হাইসে,
মনে বড় সাধ টো ছিল
হয় নাই ফটো তুলা.
নে নে বাবু তুল  এক টো
ফটো কেনে.
ফটিক যেন চঁাদ ফিরে পায় হাতে
ফটো তোলে মনের আনন্দেতে.


বাড়ি ফিরে ফটিক ,মনে আনন্দের ঢেল
ছবি দেখার জন্য মন, যখন তখন উদ্বেল.
এরপর  ছবি নিয়ে বারবার
গেছে সেই গঁায়ে,
খঁুজতে সেই অপরূপ দর্শনা
আর সে কখোনো খুঁজে পায়নি
সেই পাহাড়ি ঝর্না.
মনের  কোনে ই রয়ে যায় ;
সেই স্বপ্নে দেখা পরী,
ঘরে তে এলো না সে,
লাল টিপ শাখা পলা
আর পড়ে লাল শাড়ি.