ঈশান কোনে মেঘ জমে হঠাৎ অন্ধকার করে এলোমেলো বাতাস উড়িয়ে নেয় ঘরবাড়ি,
ভাংচুর করে গাছপালা
আহত হয় পশুপাখি, দেখে ব্যথিত হয় হৃদয়।
এ ঝড় দেখতে পাই বলে ভয়ে কম্পিত হয়
মানবতা জেগে উঠে।
আমার হৃদয়ে তো প্রতিদিন তারচে ভয়াবহ ঝড় হয়
ভাংচুর করে বুকের পাঁজর গুলো
ক্ষতবিক্ষত হয় হৃদয়ের বাঁধ
ডানাভাঙা পাখির মতো কাতরায় স্বপ্নগুলো।
কই! একদিনও তো তুমি এগিয়ে এলেনা
মোর ভাঙা স্বপ্নগুলো জোড়া লাগাতে
পাশে দাড়িয়ে অভয় দিয়ে বললে না
এতোটা ভেঙে যেওনা না, আমি তো আছি পাশে।
সবাই স্বার্থপর সবাই
যার যার স্বপ্ন পূরনে ক্লান্তিহীন ভাবে ছুটে চলছে
দ্বিকবিদিক ঘুরছে লাগামহীন ঘোড়ার মতো।
আমার হৃদয়কাশে প্রতিদিন মেঘ জমে, ঝড় হয়
বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় চারপাশ
এই এতোটা বছরে একদিনও খোঁজ নিয়েছ
জানতে চেয়েছো কেমন আছি তুমি ছাড়া?
এই ঝড়, এই বাঁধ ভাঙা তো তোমার জন্য
তুমি ছাড়া আমার এই পৃথিবী সাহারা মরুভূমির মতো।
অনেকের মতো তুমিও তো হাত রাঙিয়েছো মেহেদী পাতার রঙে
কখনো কি ব্যথিত হয়েছো সেই পাতার তরে
তোমাদের হাত রাঙাতে, সৌন্দর্য বাড়াতে উৎসর্গ করে নিজের জীবন।
বাড়ির আঙিনা কিংবা রাস্তার পাশের অর্জুন গাছগুলো দেখেছো
আমাদের বিষাক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহন করে
মুক্ত নিঃশ্বাস নিতে অক্সিজেন দেয়
আমাদের অসুখ সারাতে সে তার সম্ভ্রম বিলিয়ে দেয়।
আমি তো তোমাকে মেহেদী পাতা কিংবা অর্জুন গাছের মতো হতে বলিনি
বলিনি জীবন উৎসর্গ করতে আমার তরে
আমি চেয়েছিলাম পাশে থাকতে,
ভালোবাসতে, খোঁজ খবর নিতে ভালমন্দের।
যখন বৃদ্ধ হয়ে যাবো,
লাঠি ঠকঠক করে পথ চলবো
তখনও যদি নাজমিন ফিরে এসে বলো
আমি ফিরে এসেছি, গ্রহণ করো আমায়
এই বুক পেতে দিয়ে আলিঙ্গন করে নিবো তোমায়।
দেহের যৌবন নাহয় ক্ষইয়ে গেলো
কামভাব জাগ্রত নাই-বা হলো
হৃদয়ের অফুরন্ত ভালোবাসার চাদরে ঢেকে রাখবো তোমায়।
শুকনো পাতার মর্মর শব্দে আনন্দ পাও
কখনো ভেবেছো, যে শব্দে তোমার হৃদয় দোলে
সেই শব্দ গুলো শুধু শব্দ নয়
এইগুলো আর্তচিৎকার, রোদন, ক্রন্দন।