ওগো কেমন আছো তুমি?
জানি ভালো নেই
হয়তো আমার মতোই বিছানার এপাশ ওপাশ হয়ে
প্রতিটি রাত ভোর হয় তোমার।


তুমি বিদেশ চলে যাওয়ার পর
প্রতিটি রাত আমার তুমি হীন কেটেছে
তুমি হীন প্রতিটি রাতে দীর্ঘশ্বাসের স্বাক্ষী
ঘরের এই দেয়াল গুলো, অন্ধকার রাতগুলো
বালিশ আর চৌকির তক্তাগুলো।


জানি না তুমি আমায় মনে রেখেছো কি-না
আমার এই নগ্ন দেহের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ
তোমার মনে পড়ে কি-না।
হয়তো কাজের চাপে, হয়তো নিজের ইচ্ছায়
ভুলে গিয়েছো আমায়, ভুলে গিয়েছো স্মৃতিটুকু।

যখন রাত নেমে আসে, একাকিনী থাকি
তোমার কথা মনে হলে
হৃদয়ে ঝড় ওঠে, ক্ষতবিক্ষত করে
তোমার মেয়ে জেগে যাবে বলে
শাড়ির আঁচল খানিকটা মুখে গুঁজে নীরবে কেঁদে বালিশ ভিজায় গো আঁখি জলে।


এখন তো দুনিয়া আধুনিক, আধুনিকতার ছোঁয়া ঘরে ঘরে
হয়তো তোমার মাঝে-ও লেগেছে
আমি রয়ে গেলাম সেকেলের গায়ের বঁধুর মতোই
চাওয়া পাওয়া গুলো প্রতিদিন-ই কবর দেই।


তোমাকে নিয়ে কতো স্বপ্ন দেখি
ইচ্ছা অনিচ্ছায় কিছু স্বপ্নকে হত্যা করি।
কি করবো,
তুমি তো আমার কষ্টগুলো কখনো বুঝতে চাওনি
তোমার সাথে শুয়ে চৌকির একপাশে গিয়ে যখন
অঝোর ধারায় কান্না করতাম
তখনো তুমি আমায় বুঝতে পারোনি, কাছে টানোনি
মুছে দাওনি চোখের জল।


কতো কাম আমার জানো?
সূর্য জাগার আগেই আমি জেগে ওঠি
তোমার অসুস্থ বাবা-মায়ের সেবাযত্ন,খাওয়া দাওয়া
তোমার মেয়ের সকালের নাস্তা,
স্কুলের ব্যাগ গুছিয়ে স্কুল পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়া
সারা বাড়িতে ঝরে পরা পাতা পরিষ্কার করা
হেমন্তের পাকাধান কেটে বাড়ি নিয়ে এলে
সকাল থেকে রাত অবধি ধান সেদ্ধ করে
সেদ্ধ ধান সকালে রৌদ্রে শুকাতে দিয়ে খানিকটা
পরপর দু'পায়ে সাগরের ঢেউয়ের মতো ঢেউ তুলে দেই
আর ময়নার মা'কে ডেকে এনে
কামলার জন্য রুটি আর ডাল-ভাত রান্না করতে বলি
তুমি তো আবার বলবে এইগুলো কাম হইলো নাকি।


এক যুগ হলো তোমাকে দেখিনি
এই একযুগে বারোটি বসন্ত এসেছে, কতো ফুল ফুটেছে বাগানে
কতো ফুল গাছের নীচে ঝরে পরে শুকিয়েছে
কিন্তু আমার বাগানে কোন ফুল ফুটেনি
তুমি তো আমার সেই ভ্রমর
তোমার স্পর্শ ছাড়া আমার বাগানে ফুল ফুটতে পারে না।
আসছে বসন্তে এসো
সাজিয়ে রাখবো আমার এ বাগান।


আল জুবাইল -সৌদি আরব