সুশিক্ষা দেওয়া শিক্ষকের ধর্ম
নিতে পারিনি সুশিক্ষা শিক্ষকের ঘরে নিয়ে জন্ম।
ছিলাম আমি বদের হাড্ডি ঘুরতাম পাড়ায়
বইখাতা যেতো পাঠশালায় আমি যেতাম দিগন্তে।
বাবার আদর্শ পারিনি ধরতে নষ্টে আছি মেতে
বাবা এখন দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে দাড়িয়ে সৈকতে।
হাজারো মানুষ সুশিক্ষা নিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে আলো
এমন পিতার সন্তান হ'য়ে জীবন আমার কালো।
দমাতে মোর মনের জেদ, বাবার হাতে উঠেনি কভু বেত
নরম স্বরে বলতেন কথা, মনে হতো চিরতার চাইতে তিতা।
গগনচুম্বী সম্মান মিশিয়ে দিয়েছি ধুলোয়
বিদীর্ণ অন্তর ল’য়ে ভয়ে ভয়ে হয় বিবর্ণমুখ।
হাজারো মানুষের কারিগর, গড়তে ব্যর্থ নিজের ঘর
ব্যর্থতার গ্লানি বুকে চেপে একটু হাসতে চান চক্ষুড়ালে।
আসতে চায়না হাসি, লোকে বলবে সমাজ বুঝে-না মাসি
রক্তমাখা হাসিতে জিতিয়ে আসেন সমাজ।
মনে মনে গালি দিতাম তাকে, যে শালা আবিষ্কার করেছিল পাঠশালা
এ-তো পাঠশালা নই যেন এক বন্দীশালা।
পায়ে শেকল বেড়ি মুখে তালা সম্মুখে বইখাতা
পরান চায়তো মুক্ত পাখির মতো উড়ে বেড়াতে।
পাঠশালার পাঠ পাঠশালাতে বাঁধতো ঘাট
খাতা-কলম ছুঁড়ে, দিন কাটাতাম বনে-বাদাড়ে ঘুরে।
যে ঘর ছিলো মোমবাতি, আলো ছড়াতো চারপাশে
সে ঘর আজ আলোহীন, মানুষহীন,গহীন অন্ধকার।
সুশিক্ষা চেয়েছিলেন দিতে, মস্তিষ্ক পারেনি নিতে
সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বলে পারিনি গিলতে।
অন্যায় অবিচারে চলি আমি অবিচল
ক্ষমতার পা চেটে হতে চাইনা অধিশ্বর।
এ সমাজ যেমন চায় তেমন হতে পারিনি
হতে পারিনি সমাজের শিক্ষায় শিক্ষিত।
সমাজের নিয়মকানুন করি উপেক্ষিত
আমি হতে পারিনি সুশিক্ষায় শিক্ষিত।
শিক্ষকের ঘরে নিয়ে জন্ম করছি আমি কেমন কর্ম
বুঝতে পারিনি বাবার ব্যাথার মর্ম।
গাধা গাধা বই পড়ে, গাধা বোঝাই সার্টিফিকেট ল’য়ে
যদি করতাম মিথ্যের উপর বাস, বাহবা দিয়ে সমাজ বলতো সাব্বাশ।