আমাদের গাঁয়ে ছিল যে মহা এক কৃপণ
সন্তানের চেয়ে বেশি প্রিয় ছিল তার ধন।
সেই কৃপণে কিনিলি একবার নতুন একটি জামা
কবিতাতে যায় লেখা কি এমন কৃপণনামা।


ছিড়ার ভয়ে দেয় না কৃপণ সেই জামাটি গায়ে
কাঁধের উপর রাখে ঝুলিয়ে ডানে আবার বায়ে।
খালি গায়ে ঘুরে কিপ্টা, তার জামা কাঁধে ঝুলে
দুইশত টাকা জামার মূল্য কষ্ট মর্মমূলে।
এত সাধের জামাটি তার হয় যদি নষ্ট
কেমন করে সইবে সে দুইশত টাকার কষ্ট।


এমনি করে পার করে সে বছর তিন গুণে
নতুন কি আর থাকে নতুন বলুন এত দিনে।
সাদা জামা কালো হলো তেল চিটচিটের দাগে
ময়লা পুরান জামাটি দেখে কৃপণের বড় ব্যথা লাগে।
কিপ্টা ভাবে ধুইতে গেলে সাবান খরচ হবে
কী দরকার ধুয়ে এটা যাকনা আর কটাদিন তবে।


এমনি করে আরো একটি বছর গেল যখন কেটে
ধুইতে গিয়ে আছড়ানোতে জামা গেল তার ফেটে।
জামা ফাটার কষ্টে যে কিপ্টার হৃদয় ফেটে যায়
নদীর ঘাটে বসিয়া কিপ্টা করে হায় হায়।
বাড়ী ফিরে এসে কিপ্টার এক বুদ্ধি চাপে মনে
জোড়াতালি দিয়া তারে কিপ্টা একটি টুপি বুনে।
টুপি মাথায় ঘুরে কৃপণ অজপাড়া গাঁয়
দুইশ টাকার কষ্ট যে তার মন থেকে নাহি যায়।


দিনে দিনে টুপিখানি গেল যে আবার ছিড়ে
ছিড়া টুপি বুক পকেটে রাখে যতন করে।
দুইশ টাকার জামায় বোনা নষ্ট যেই টুপি
সেই টুপিতে কৃপণ মোছে চশমা চুপি চুপি।
এমনি করে টুপিখানা ছিড়ে হইল তেনা তেনা
টুপি নাকি জামা সেটা যায় না এখন চেনা।
কৃপণের এই কিপ্টাপনা কী আর বলিব ভাই
টুপির তেনা পুড়িয়ে শেষে কিপ্টা করল ছাই।


ভেবেছিলাম কৃপণনামা এখানেতেই হবে শেষ
শেষ হয়েও হলো না শেষ রইল কিছু রেশ।
টুপি পোড়া ছাই দিয়ে সে বানায় দাঁতের মাজন
এমন কৃপণ দুনিয়াতে আর আছে কি কয়জন।
দাঁত মেজে কুলি করে কৃপণ কাঁদিয়া বলে
হায় হায় দুইশ টাকা আমার বৃথাই গেল জলে!
২৩-১১-২০১৭


ছন্দ: অক্ষরবৃত্ত
পর্ব বিভাজন: ৮/৮, ৮/১০ মাত্রা।