বাংলা আমার দুখিনী মাতা ব্যথায় ভরা বুকে
শোকে কাতর পাথর জড় পুত্র হারা শোকে।
বায়ান্নতে ভাষার জন্য হারালো তার সন্তান
রক্ত দিয়ে রাখতে হলো মায়ের ভাষার মান।
একাত্তরে সম্ভ্রম আর লাখো শহিদের রক্ত ঢেলে
মুক্ত হয়ে স্বাধীন দেশের পতাকা এনে দিলে।
পঁচাত্তরে আবার হারালে শ্রেষ্ঠ সন্তান শেখ মুজিবুর রহমান
স্তব্ধ জাতি হারায়ে তাঁকে হতবিহবল শোকে মুহ্যমান।
পদ্মা মেঘনা সুরমা যমুনা রক্তে করেছ লাল
অশ্রুভেজা করুণ চোখে কেঁদেছ চিরটা কাল।
স্বাধীনতার মন্ত্র পড়ে দেশের জন্য লড়ে
তোমাকে মা এনেছিল শৃঙ্খল মুক্ত করে।
একাশিতে জিয়াউর রহমান এক অসীম সাহসী যোদ্ধা
তাঁকেও হারালে যাকে জাতি জানায় সালাম শ্রদ্ধা।
নব্বইয়ে হারালে নূর হোসেন মিলন গণতন্ত্রের ডাকে
মুক্তি পাগল সোনার ছেলে বুলেট বিদ্ধ বুকে।
দুইহাজার এক বর্ষবরণ রমনার বটমূলে
ক্ষত বিক্ষত বোমার আঘাতে তোমার শত ছেলে।
দুইহাজার চার একুশে আগস্ট গ্রেনেডে ঝাঁঝড়া বুক
রক্তে ভিজালে শান্ত রাজপথ বিবর্ণ ফ্যাকাসে মুখ।
দুইহাজার নয় ভুলিবার নয় বিডিআর বিদ্রোহের কথা
বুলেট গ্রেনেডে আবার কাঁদিল দুখিনী বাংলা মাতা।
জঘন্য নিষ্ঠুর বেদনাবিধুর নির্মম এক কাহিনী
ষড়যন্ত্রের জালে পড়ে বিডিআর মারে সেনাবাহিনী।
একই মায়ের দুটি সন্তান করে অকারণ হানাহানি
রক্তে ভিজালো দুখিনী মায়ের সবুজ আঁচলখানি।
এক ঢিলে দুই পাখি শেষ বিপন্ন অসহায় মাতৃভূমি
সেনা হারানোর বেদনার ক্ষত আজও বয়ে চলেছ তুমি।
আগুন সন্ত্রাস পেট্রোল বোমা তোমার বুকে জ্বলে
ক্ষমতার দ্বন্দ্বে হারালে তোমার কত নিরীহ ছেলে।
দুইহাজার ষোল সব এলোমেলো গুলশান হলো নরক
জঙ্গীর ভঙ্গিতে ধর্মের ছলে আবার আসিল মরক।
জননীর বুকে আবার আঘাতে খুনি পিশাচের দল
দুখিনী মাতার চোখে আবার গড়ায় নোনা জল।
মাগো তুমি ভয় পেয়ো না আমরা আছি জেগে
তোমার মুখে ফুটাতে হাসি দিব রক্ত যত লাগে।