(কবিতাটি এক সহকর্মীর কর্মবসানে বিদায় সংবর্ধনায় নিবেদিত।)


বিদায়-
ছোট্ট একটি শব্দ
উচ্চারণে আকাশে বাতাসে
কত যে বিষাদ ধ্বনিত হয়!
বিদায় শব্দটি নির্মম নিষ্ঠুর
ভীষণ যাতনাময়।
বিদায় মানে হৃদয় ভেঙ্গে
প্রিয়জনের দূরে যাওয়া,
বিদায় মানে মানব জীবনে
সময়ের বৈরি হাওয়া।
বিদায় মানে সাজানো জীবনে
লণ্ডভণ্ড কালবৈশাখী ঝড়
বিদায় মানে বিরহ তানে
বেদনায় ভরা ঘর।
বিদায় মানে কাছের মানুষ
দূরে চলে যাওয়ার বেদনার সিন্ধু
চোখের কোণায় অলক্ষে গড়ায়
তপ্ত অশ্রুবিন্দু।
বিদায় মানে একসাথে চলার
রাশি রাশি সুখ দুঃখের স্মৃতি
বিদায় মানে বন্ধু হারানোর
অজানা এক ভীতি।
বিদায় মানে বেদনাবিধূর অশ্রুসজল চোখ
বিদায় আবার নতুনের আগমন
নতুন প্রাপ্তির সুখ।
বিদায়ের ক্ষণ ভারী দেহ মন
জলে ভেজা চোখ
বুকের পাঁজরে আঘাতে সজোরে
প্রিয়জন হারানোর শোক।
বুকের ভিতর শোকের মাতম
তবুও দিতে হয় বিদায়
সময়ের নিঃশব্দ রেলগাড়ি
যখন এসে থমকে দাঁড়ায়।
তোমার কর্মযাত্রা হয়েছে অবসান
পৌঁছে গেছো শেষ স্টেশনে
নামতে হবে এখানেই
নিতে হবে বিদায়;
কালের যাত্রায় তোমাকে রেখে
চলবে আবার সময়ের নিঃশব্দ রেলগাড়ি
কত তাড়াতাড়ি
জীবনের সময় ফুরিয়ে যায়!


এখন গোধূলি সময়-
ঐ দেখ ডানা মেলে ক্লান্ত পাখিরা
যাচ্ছে ফিরে আপন কুলায়,
বেলা শেষে সবাইকে যেতে হয়,
সকলেই চলে যায়।
ওগো কর্মের সাথী-
তুমিও যাবে, চলে যেতে হবে
তোমাকে জানাই বিদায়,
সময়ের নিঃশব্দ রেলগাড়িটা
তব দুয়ারে দাঁড়ায়ে রয়েছে ঠায়।
যাবে যদি যাও, তবে-
যাবার বেলায় কেঁদো না
আমাদের ভুলগুলো ভুলে যেও
হৃদয়ে পুষে রেখো না।
জলের উপর বাড়ি দিয়েছ পাড়ি
জীবনের সুবর্ণ সময়
যা কিছু ছিল দিয়েছ উজাড় করে
নিঃশব্দ কর্মময়।
সবুজ মাঠ হলুদ সোনালু
পৌষের হিম হিম শীতের শিশির
তোমাকে রাখিবে স্মরণ
ওহে কর্মবীর।
তোমার কর্মভূমি সংসদ ভবন
দেখো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে গৌরবে,
বিদায় বেলায় তোমার শূন‌্য হৃদয়
ভরে ওঠুক সকলের ভালোবাসা
আর বর্ণিল ফুলের মিষ্টি সৌরভে।
২-১-২০১৭