(১০ জানুয়ারি, ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শেখ মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। জাতি এই দিনটিকে স্মরণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত‌্যাবর্তন দিবস হিসেবে।
এই মাহন দিনে মহান নেতার প্রতি আমার ক্ষুদ্র নিবেদন।)
ফিরে এলে তুমি
ফাঁসির সে মঞ্চ থেকে হাসিমুখে
তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলায়
নিয়ে এলে স্বাধীনতা
নিয়ে এলে নতুন স্বদেশ
বুকে জড়িয়ে লাল সবুজ পতাকা।


যখন তোমার ডাকে
অচেতন বাঙালি ফিরে পায় দিশা
ঘোর অমানিশা কেটে
গর্জে ওঠে মুষ্টিবদ্ধ হাতে
তখনই তারা বুঝেছিল
জনসমুদ্রের উত্তাল জোয়ার
রোখা হবে ভার।
ঠিক তখনই-ষড়যন্ত্রের
জাল বুনে পাকি জানোয়ার।


২৫শে মার্চের মধ‌্য রাতে
নিস্তব্ধ শহরে নামে নরকের বিভীষিকা।
গৃহবন্দি তুমি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান
তোমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে
শত্রুর নির্মম বেয়নেট মেশিনগান।
মৃত‌্যুভয়ে ভীত নও তুমি
হিমালয়সম অটল, তোমার মনোবল
ভয়ে দমে যাবার তো নয়
তোমার বজ্রকণ্ঠের স্বাধীনতার শাশ্বত বাণী
তখনও বাতাসে ভেসে রয়।


ওরা ভেবেছিল-
তোমাকে নিঃশেষ করে দিতে
পারলেই তো বাঙালির
বুকের আগুন নিভে যাবে
ফিকে হয়ে যাবে স্বাধীনতার সে সাধ।
কিন্তু না, তোমাকে বন্দী করে সেই
আগুনে ঘি ঢালে
ভেঙ্গে দেয় বাঙালির ধৈর্যের বাধ।
আগুন মুখে ঝাপিয়ে পড়ে
তোমার শেখানো মন্ত্র ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে
স্লোগানে প্রকম্পিত আকাশ বাতাস
‘জেলের তালা ভাঙবো, শেখ মুজিবকে আনবো’
সেই প্রত‌্যয়দীপ্ত স্লোগান
জয় করেছে ট‌্যাংক মেশিনগান।


তারপর রচিত হলো নুতন ইতিহাস।


নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম
৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে বাঙালি
তোমাকে উপহার দিল নতুন স্বপ্ন
নতুন দেশ
তোমার আজন্ম সাধনার বাংদেশ।
অবশেষে বীরের বেশে তুমি
ফিরে এলে স্বপ্নের সোনার বাংলায়,
তোমার গৌরবময় প্রত‌্যাবর্তনে
বাংলার পোড়া মাটি প্রাণ ফিরে পায়।
তোমার আগমনে সবুজ বনানী
জেগে ওঠে পত্র পুষ্প পল্লবে
বারুদের গন্ধ মুছে দিয়ে
তোমার বরণ মাল‌্য বাতাসে
পুষ্পের সৌরভ ছড়ায়;
বাঙালির বুকে জড়িয়ে নেয় তোমাকে
অসীম মমতা ও ভালোবাসায়।


১০-১-২০১৭