[মাঝখানে বাদ পড়া ৩টি নতুন পর্বসহ সবগুলো পর্ব এক সাথে]


দিনমজুর সগিরালি


নিত্য অভাব সগিরালির ভৃত্য খাটে রোজ
তার আয়েতে ছয়টি প্রাণীর হয় না ভুড়িভোজ
সগিরালি খাটে
অভাবে দিন কাটে
আগ বাড়িয়ে সগিরালির নেয় না কেহ খোঁজ।


সগিরালির জীবন তো আর চলছে না
তার কথা তো এখন কেউ আর বলছে না
কবির চোখে একা
পায় সগিরের দেখা
করুণ কথায় পাথর হৃদয় কারো যে ভাই গলছে না।



ছগিরালি ঢাকায়


ছগিরালির কাপাল ভাঙ্গে, ভাঙ্গে পদ্মার পাড়
শেষ ঠিকানা ভিটা-মাটিও নদী খেলো তার
সগির বাঁচতে চায়
সন্তানের মায়ায়
অশ্রু ঝরে দুই চোখে তার গাঢ় অন্ধকার।


আশার আলো দেখায় জমির চলনা ছগির ঢাকা
শুনছি সেথায় বাতাসেতে উড়ছে নাকি টাকা
ছগির রাজি হয়
শঙ্কা মনে রয়
বহিরাঙ্গে রঙিন ঝালর ভিতরে তার ফাঁকা।


যমের মুখে ছগিরালি


পথে পথে ঘুরে ছগির সন্ধ্যা হলো যেই
চাটাই পেতে পড়লো শুয়ে ব্যস্ত ফুটপাতেই
ক্লান্ত হেঁটে হেঁটে
ক্ষুধার জ্বালা পেটে
অনিশ্চত এক জীবন ভাবনায় হারিয়ে ফেলে খেই।


ভাবনাতেই তার কাটে সময় ঘুম আসে না চোখে
খানিক বাদেই পড়লো ছগির হিংস্র যমের মুখে
রাত্র গভীর হলে
নরপিশাচের দলে
বাঘের মতো কামড়ে দিলো কন্যাশিশুর বুকে।


টিটিপাড়া বস্তিতে ছগিরালি


টিটিপাড়া বস্তিতে এক ছোট্ট ঝুপরি ঘর
আরশোলা ব্যাঙ সবাই আপন মানুষগুলোই পর
সগিরালি কাঁদে
সাহসে বুক বাঁধে
প্রভুর কাছে মাগে ছগির প্রাণ বাঁচানোর বর।


কমলাপুর ইস্টিশনে খাটে ছগির মুটে
দিনের শেষে পকেটে কার কয়টি টাকা জুটে
ছগির ঘরে ফিরে
লোকাল বাসের ভীড়ে
টেরই পায়নি পকেটমারে পকেট নিছে লুটে।



সেই ছগিরালি


ছগিরালির কথা আবার পড়লো মনে আজ
বৃদ্ধ ছগির, কেউ তারে আর দেয় না কোনো কাজ
ছগিরালি কাঁদে
বিবেকে তার বাধে
জনে জনে ভিক্ষা চাইতে করে যে তার লাজ।


পেটে ক্ষুধা চোখে শরম ছগিরালি কয়
পাতবো না হাত কারো কাছে মরন যদিও হয়
জীবন যুদ্ধে হারবো না
হালটা কভু ছাড়বো না
গরীবের ধন আত্মসম্মান সেটা যেন রয়।


রিক্সাচালক সগিরালি


রিক্সাচালক ছগিরালি প্যাডেল চাপে জোরে
শীর্ণ দেহ বল নাই মোটে চাকা নাহি ঘুরে
ছগিরালি হাঁপায়
শক্তি যোগায় পায়
আর পারে না তবু চলে দুপুর রোদে পুড়ে।


খায়নি খাবার সগিরালি সেই সে সকাল হতে
ভূখা পেটে আর পারে না কুলায় না আর রথে
যাত্রী বকে বুড়ো
করবো যে হাড় গুড়ো
টানতে যদি নাহি পারিস নামিস কেন পথে?


পরপারে সগিরালি


ছগিরালির চোখে স্বপ্ন বুকে বাঁচার আশা
ভাগ্য শুধু তার সাথে আজ করছে যে তামাশা
দিন তো একদিন ফিরবে
ঘাটে তরী ভিড়বে
তখন না হয় পাবে সগির সবার ভালোবাসা।


হাড়খাটুনী খেটেও ছগির পায় না বাঁচার ছায়া
বুড়োর ঘাড়ে চড়ে বকে নাই যে কারো হায়া
মানুষ তো আর মানুষ নাই
কার কাছে তার হবে ঠাঁই
অভিমানে ছাড়ে সগির এই পৃথিবীর মায়া।


সগিরালিআত্মার আকুতি


সগিরালির আত্মা তবু শান্তি না পায় মরে
আরেক সগির রেখে গেছে অভাবের সংসারে
নাম হয়েছে পথশিশু
দানাপানি নেই যে কিছু
পেটের দায়ে করলে চুরি লোকে ধরে মারে।


কতশত সগিরালি আছে সমাজ প’রে
সহায়তার হাত বাড়িয়ে দাওনা তাদের তরে
মানবতা মুক্তি পাক
দুঃখ দৈন্য নিপাত যাক
সুখ সম্ভারে ভরে ওঠোক বাংলার ঘরে ঘরে।
১১-৭-২০১৮