যাচ্ছি ওগো রবিঠাকুর , তোমার বাড়ির কাছে
অনেক দিনের স্বপ্ন আমার সেথায় পড়ে আছে ।
ছোট্ট বেলায় পড়েছিলেম , নদীর চর সাদা
বৈশাখেতে হাঁটু জল , কোত্থাও নাই কাদা ।
পড়েছিলেম ট্রেনে করে চলেছো বোলপুরে
ছোট্ট তুমি , তোমার ছবি বইয়ের পাতা জুড়ে ।
আমিও তখন তোমার সঙ্গে জমিয়েছিলেম পাড়ি
অনেক সে পথ পেরিয়ে শেষে থামলো আমার গাড়ি ।
মনে মনে প্রণাম সেরে পা রেখেছি যেই
মনে হলো তোমার স্পর্শ , ছুঁলাম তোমাকেই ।
এই বাতাসেই শ্বাস নিয়েছো , গান গেয়েছো তুমি
এই তো আমার স্বর্গ ! এযে আমার পুণ্যভূমি ।
এই মাটিরই সবখানেতে তোমার চরণ পাতা
সবখানেতে তোমারই গান , তোমারই সুর গাঁথা ।
রাঙামাটির যে পথ তোমার ভুলিয়েছিলো মন
সেই পথেরই দুপাশ জুড়ে শাল পলাশের বন ।
শুক্রবারে হাট বসেনা , শনি কিম্বা রবি ...
সেই হাটে আজ বিকোয় দেখি তোমার আঁকা ছবি ।
তোমার বাড়ির বন্ধ গেটে মানুষ ঢোকা বারণ
নোবেল খানি গিয়েছে চুরি এটাই নাকি কারণ ।
দীর্ঘ প্রাচীর , বাইরে থেকে যায়না দেখা কিছু
টোটোয় করে ঘোরে মানুষ ঘরের আগুপিছু ।
তোমার বাড়ির বন্ধ গেটে দাঁড়িয়ে আছি আমি  
পড়ছে মনে তোমার কথা , যেটুকু যা জানি ।
শুকনো ধুলোয় ঢেকেছে সব , বিবর্ণ চারধার
কোত্থাও নেই প্রানের সাড়া , প্রানেরই কারবার ।
গাইছে বাউল , উড়ছে ধুলো , তুলছে সবাই ছবি
কিনছে সবাই কাপড় জামা , অস্তাচলে রবি ।

কোথায় তুমি রবিঠাকুর ? কোথায় সে রাজপাট ?
কোথায় তোমার রাজপুত্তুর ?  তেপান্তরের মাঠ ?
যাচ্ছো তুমি ঘোড়ায় চড়ে , সঙ্গে নিয়ে মাকে
দস্যু এলো হা রে রে রে  চোরাপথের বাঁকে  
ছিনিয়ে নিলো মাকে তোমার , হারিয়ে গেলো দূরে
সেই ব্যথাটাই সকলখানে বাজছে ব্যাকুল সুরে ।
তুমি আছো নামেই , আছে সোনাঝুরির হাট
কোপাই খোয়াই পলাশ শিমুল সেলফি তোলার পাট ।
শাড়ি , জামা , পুঁতির মালায় ভরাচ্ছে সব মন
তারই মাঝে হারিয়ে গেছে , শান্তিনিকেতন ।

- মহুয়া বিশ্বাস