এই  গ্রামের  নাম  শিবালিকা  
এখানে  থাকেন  ভিক্ষারী  "রামু  কাকা "  
অনেক  দিনের  সে  পুরোনো  লোক  
জানেন  সায়রি  আর  হিন্দী  গানের  শ্লোক  ৷  
বৃদ্ধ  রামুকাকার  কেউ  নেই  এ  সংসারে  
শুনেছি  বাড়ি  ছিল  তার  বিহারের  মুঙ্গেরে    
এক  সময়  শরীর  ছিল  তার  বেশ  বলবান    
কবাডি  খেলাতে   সে  ছিল  বেশ  পালোয়ান  ৷  
কুস্তি  করতো  সে  হাফ  প্যান্ট  পরে  
তার   দেহ  থেকে  ঘাম  ঝড়তো    
একটু  একটু  করে  
রাত্রিতে  সে  ছিল  এ  গ্রামের  দারোয়ান  
দিনের  বেলায়  সে  খাটতো  মানুষের  ফরমান ৷  
এই  গ্রাম  শহর  থেকে  অনেক  দূরে  
কারো  কারো  দরকার  হলে  পাঠাতো    
তাকে  দিন  দুপুরে  
নিয়ে  আসতো  কাঁধে  করে  কারোর  চালের  বস্তা  
কখনও  সখনো  পার  করে  দিতেন  
ছোট  শিশুদের  হাত  ধরে   রাস্তা  ৷  
রামুকাকা  এখন  হয়েছেন  বৃদ্ধ  
একটা  চোখেতে  সে  এখন  অন্ধ    
গায়ে  নেই  তার  এখন  আগের  জোর  
অনেকে  করেনা  তাই  খাতির  কদর  ৷  
"  একটু  ভিক্ষা  দাও  মা, একটু  ভিক্ষা দাও  
এই  বৃদ্ধরে  "  
এভাবেই  দিন  কাটান  রামুকাকা  ভিক্ষা  করে  
কখনও  কেউ  ভাত  খাওয়ান  পেট  ভরে  
কেউ  কেউ  নিয়ে  যান   তাকে  হাত  ধরে  ৷  
এখন  হাতে নিয়েছে  সে  একটা  লাঠি  
আর  মাথায়  পুরানো  একটা  ছাতি    
কাঁধে  আছে  তার  মলিন  গামছা  
পথ  চলা  যে  তার  ভীষন  সমস্যা  ৷  
একদিন  দুঃখ্যের  খবরটা  এল  
গ্রামের  ঘরে  ঘরে  
রামু  কাকা  নাকি  মারা  গেছেন  
পড়ে  আছেন  রাস্তার  ধারে  ৷  
কাল  রাতে  অন্ধকারে   ঝড়ে  
বিদ্যূতের  তার  গিয়েছিল  ছিঁড়ে  ৷  
পড়ে  আছে  তাঁর  নিথর  দেহ  
তাঁর  প্রতি  গ্রামের  মানুষ  
দেখিয়েছে  পরম  স্নেহ  
নিয়ে  গেল  তাঁকে  শ্মশানে  
করবে  তাঁর  সৎকার    
আর  নিয়ে  গেল  তাঁর  
"ভিক্ষার  ঝুলির  "  কিছু  রোজগার ৷