একদিন এই পথে
হিজলের ছায়া পড়েছিল ঘাসের পরে
পল্লবের ফাঁকে ফাঁকে লুকিয়ে গেলে দিনের আলো
গাঙশালিক মেলে তার নরম ডানা নক্ষত্রের সাথে কথা বলেছিল--আমি শুনেছি
গভীর থেকে আরও গভীরে
যেখানে চাঁদ বাঁধেনি তার বাসর ঘর
এমন এক ঘন আঁধারে নীল পিদ্দিমের মতো জ্বলে হায়েনার চোখ ।
চারিদিকে পলাশ আর মহুয়ার বন;
নীরব কুয়াশার কানে কথা বলেছিল ভোরের শিশির আমি শুনেছি
একদিন এই পথে হীমেল বাতাসের গায়ে লেগেছিল ধোঁয়ার গন্ধ।
‘উষ্ণ মচকা ফুলের মতো লাল আগুন’
কোমল পাপড়ির মতো ঠোঁট তুলে শিষ দিয়েছিল কিশোরীর দেহে,
সারা রাত জেগে সেই সাঁওতালী মেয়ে
শুকর আর হরিনীর দাহে ঝরিয়েছে ঘাম ।
শুনেছি, একদিন এই হৈমন্তির শেষে গাঙ্গুরের জলে ভেসে গিয়েছিল ইন্দ্রের সভায়
বড় করুনায় সেজেছিল সেদিন নারকেল অর্জুন আম
বড় আবেগী মনে তাকিয়ে ছিল মাছরাঙার ঠোঁট;
একদিন এই কার্তিকের মাঠে সমস্ত ধান ঘুমিয়ে গেলে
আকাশ হতে নেমে এসে দোয়েল শ্যামা বড় আত্মীয়তায়
শুকনো পেয়ারা আর সজিনার ডালে ক্লান্তির লেশ ঝেরে চেয়েছিল
ওই হুতুম পেঁচাটির মতন আমিও শুনেছি
একদিন এই দুর্বার পথে কলমীর সায়ে বেহুলাও হেঁটেছিল ঘুঙুর পায়ে ।