রেলগাড়ি থামে আঁধার পথে, রক্তমাখা বুকে চাপে,
চোখে ভয় আর কাঁধে বস্তা — কাহারও ঘর হারায় চাপে।
পথে ও পথে কান্নার সুরে — ওঠে বিষণ্ণ আর্তনাদ,
শরণার্থীর ছায়া পড়ে, চিরচেনা সেই নগরকাদ।

যেই বন্ধু ছিল খেলার সাথি, হঠাৎ করে আজ পরায়,
ধর্মের নামে বিভেদ উঠে, রক্ত নেমে রোজ সরায়।
আঁচল ধরে শিশু কাঁদে, খুঁজে মায়ের বুকের ঠাঁই,
কোথা গেলে শান্তি মেলে? কেউ আর এখন বলে না ভাই।

বাজারে আগুন, ঘরে শূন্য — স্কুলে তালা পড়ে যায়,
আব্বা-দাদার গড়া গাঁয়ে আতঙ্ক শুধু ঘোরে হায়!
মন্দির, মসজিদ এক সাথে ছিল — আজ তারা মুখ ফিরায়,
প্রার্থনার ভাষা ভুলে, মানুষ মানুষকে কাটে হায়।

চিঠির খামে পত্র শূন্য, ঠিকানার নেই আর খোঁজ,
ভালোবেসে লিখা নাম সব ইতিহাসে মুছে রোজ।
নদীর পারে যে আলো জ্বলে, তা কি তবে শান্তির আশ্বাস?
নাকি ওটাই নতুন বিভাজন, আরেকবার সেই সর্বনাশ?

বৃদ্ধ বসে খুঁটে বলেন, “এই দেশ তো ছিল আপনজন,
আজকে কেন অচেনা মুখ — কে নিলে সব প্রেমের ঋণ?”
উত্তর নেই কারো মুখে, শুধু বাতাস কাঁদে ধীরে,
ভাঙা মানচিত্রে লেখা হয়, রক্তের কলমে ইতিহাস ফিরে।