লাউ গাছটা কেটনা মা, সেটি বেড়ে চলেছে একই ধাঁচে,
যেমন তুমি আমাকে বড় করেছ যত্ন করে।
এইতো ক’টা দিন, আমি চলে আসব তোমার কোলে।
তখন লাউয়ের সবুজ শাক আর ডগার স্বাদ নেব প্রাণ ভরে।
মা, সজিনা গাছটির খবর কি,
এখনও কি সেটা ফুলে ফুলে ঝালর দোলায়।
গাছটিতে কি এখনও সজিনা ঝুলে,
যেমন বড় ভাবীর নাকের নথ ঝুলে থাকে তারাবাতির টুকরো হয়ে।
আমার এখনকার শহুরে মন সিঁধেল চোর হয়ে
তোমার কোল খুঁজে, কত কাল তোমার কোলে মাথা রেখে
ঘুমাইনি মা আমি।
এখন আর আমাদের গ্রামের বাড়ির ভাঙ্গা দালানের ফাঁকে
চামচিকে লুকিয়ে থাকার দৃশ্যে আমার মন পুলকিত হবার
অবকাশ পায়না।
আর বাড়ির অঙ্গিনায় আমাদের সেই যে ডালিম গাছটাতে
চড়ুই নেচে চলে সরাক্ষণ, এখানে, এই ইট কাঠের জীবন গারদে
আমি সেটাও দেখিনা এখন।
আমি আসছি মা, আসছি এই ক’টা দিন পরে...............।
কলাই আর কুমড়োর বড়ি রেখেছতো মা তুলে আমার জন্য?
শেষ কথা, মা তুমিতো জান, আমার বউ ছাওয়ালরা শহুরে,
তাই তোমার জন্য মিরপুর পল্লী তাঁত থেকে দু’খানা শাড়ি কিনে রেখেছি।
তারা সেখানে গেলে তুমি সেগুলো পরে থেক যতন করে।
এইতো ক’টা দিন, ক’টা রাত মা, তারপর ঘনিয়ে আসছে সময়.............
এল সেই পুলকিত ক্ষণ, ঈদের আনন্দে নাচছে সবাই, নাচছে সবার মন।
তারপর লং রুটের বাস কেড়ে নিয়ে গেল, সেই পরিবার, সেই মায়ের আদরের ধন।