নগর ঢাকা হাত ছানি দিয়ে ডাকলো গ্রাম বাংলার বাবর আলিকে।
ছেলেটি তার কি যেন কি পেয়েছে এক সরকারি চাকুরি।
বেতনে নাকি পুত্রের পকেট ঠাসা,
আর গাড়ি বাড়িতে অবস্থাটাও তার খাসা।
গায়ে তার উঠলো নতুন পাঞ্জাবি পাজামা, দাড়িতে চড়লো মেহেদি রং,
জরিদার টুপি উঠলো মাথায়।
জীবনের এই প্রথম, হবে ঢাকা শহর দর্শণ।
তার তিন শত ষাট হাড়ের জোড়ায় কাঁপলো বাঁধন!
স্ত্রী বলে, দেখে শুনে চলিও সেথায়,
দেখ যেন সাদা কাপড়ে না লাগে পানের পিক,
আর রাস্তা পারপারেও চোখ দুটি খোলা রাখিও চারি দিক।
বাবর আলি রোমাঞ্চের ব্যাদান খুলে,
গদো গদো স্বরে বলে, এইতো তোমার এক দোষ,
গত পঞ্চাশ বছর ধরে দিতেছ কেবল উপদেশ।
আমি কি তোমার মত ছাগল, নাকি কোন কানা ঘাটের পাগল।
দেখে নিও তুমি, সেথায় চলব আমি, আনকোরা যুবকের মত।
এক্কেবারে সন্দেহ নাই তাতে,
তার পর ঢাকা শহর ঘুরে, জুড়াব আমার প্রাণের মলাট খুশিতে ভরে।
বাবর আলি এল এবার ঢাকা।
সকাল হতেই নামাজ পড়ে ধরলো সে রাজ পথ।
বলে সে নিজেকে, বড় বড় দালানে ঠাসা, এই নাকি ঢাকা?
কতক্ষণ পরে বেলাটা বাড়লো বেশ।
হঠাৎ দেখে এক দঙ্গল লোক, পড়তেই চোখের পলক,
শুরু করলো পথ অবরোধ।
এল তেড়ে পুলিশ, বাজিয়ে হুইশেলের শিস,
তারপর সরাসরি, পুলিশে জনতায় শুরু হলো মারামারি।
এক দিকে পুলিশ, অন্য দিকে জনতা।
মারামারি দেখে বাবর আলি বলে, বেকুব নাকি এরা, খামোখাই
কেউ যদি যায় মারা।
শেষে বাবর আলি পড়লো আম জনতা আর পুলিশের মাঝে,
এরপর মাথায় ইটের বাড়ি খেয়ে পড়লো সটান শুয়ে।
বাবর আলির চোখে এখন, ভাসে গ্রামের আসমান।
সেথা ছিল রোদ, ছিল বতাস, ছিল শান্ত নদী বহমান।
মাটিতে পড়ে বাবর আলির আত্মা চললো ভেসে।
কেউ যেন বলছে তাকে, বাবর আলি, আয় চলে আয়,
কি হবে আর থেকে, এই নরকে ভাসা ইহলোকে।
এখানে কিছু মানুষের বিবেকে ধরেছে ঘুন,
তাইতো তারা  মানুষ হয়ে মানুষ করছে খুন।


হ-য-ব-র-ল-৩০