কহিল রাজন চাঁদ, বেটা বাঁদর আমার
পুষিলাম তোমারে আমি বছর তিনেক।
ছিলে তুমি বনের বাঁদর, এখন তুমি
কর যে দেখি কাব্য।
কুঁচকিয়া ভ্রু দু’টি, ছলকিয়া গালের টোল
কহিল বাঁদর, প্রভু রাজন চাঁদ,
নাহি নাহি, করিনা আমি কাব্য
কিংবা মালিক না যোগাই আমি
সাহিত্যের কোন খাদ্য।
কহিল রাজন চাঁদ, উঁ-উঁ-হু বেটা বানর,
চালাকি করিবে নাহি মোটে,
নয়ত রুলের গুঁতো মারিব তোমার পেটে।
বানর ধরিল চাপিয়া পেট,
উল্লম্ফন দিল গোটা তিনেক।
কহিল, পেটে মারিলে গুঁতো,
তাহাতে হইবে যে প্রভু
মস্ত এক খান ফুটো!
কহিল রাজন চাঁদ, সাধু, এবার তবে
বাঁদরামি ছাড়িয়া কহ দেখি,
তুমি যে তোমার বউয়ের মাথার উকুন
বসিয়া বসিয়া বাছ,
ইহারই ফাঁকে সুযোগ বুঝিয়া
গাল দু’টিতে তাহার টিপ্পনি কাট।
কহিল বাঁদর, বড়ই শরমের কথা।
ইহা তো আমার বাঁদরিণীর প্রতি আদর,
কেমনে হইল ইহা কাব্য খোরাকের ঘর?
কহিল রাজন চাঁদ, বেটা বাঁদর
এরপর কহ দেখি, সে দিন তুমি
আয়নায় দেখিয়া নিজের মুখ
ভাবিলে ইহা কেমন ল্যাঠা,
অায়নার গায়ে খোদ আমারই সুরতে
বসিয়া রহিয়াছে অন্য এক বাঁদর বেটা।
হইল তোমার গোস্বা, তোমার গালে
লাগাইলে তুমি কালি।
দেখিলে, সে-ও এক বাঁদরের বাঁদর,
তোমার মতই মুখে মাখিল কালি-ঝুলি।
রাগে কাঁপিল তোমার দেহ।
গায়ে যত ছিল জোর লইয়া তাহা,
আয়নার গায়ে চড়াস শব্দে
মারিলে তুমি এক থাবা।
ভাঙ্গিল আয়না, কাটিল তোমার হাত।
রক্তে রক্তে বহিয়া বন্যা
বানর কাব্য হইল কাত।