ঢুকিল চোর গৃহস্থ ঘরে, পেটে তাহার ক্ষুধার আগুন,
হঠাৎ পড়িল ধরা।
বলিল গৃহস্থ কাটিয়া ফেল চোরা বেটার পেট,
দেখি ক্ষুধার আগুনে কতটা তাহা ভরা।
কহিল চোরা -
কাটিলে আমার দেহ,  
ত্রিভুবনে কাঁদিবার নাই কেহ।
তবে বলি শোন -
ক্ষুধার পেটে কাটিলে আমায়  
শাস্ত্র মতে হইবে পাপ,
ইহাতে রক্ষা নাই কোন।
কহিল গৃহস্থ -
চোরা মুখে শুনি একি ধর্মের কাহিনী!
ধূর্ত চোরার কথা আমি নাহি মানি।
পরে আসিল শাস্ত্রীয় গুরু,
যুক্তি তর্কের হইল শুরু।
চোরা কহিল -
গুরু, আমি তো নিষ্পাপ, বাঁচাও আমায়।
গৃহস্থ বলিল, দন্ডাজ্ঞা হইতে চোরার বাঁচিবার উপায় নাই।
শেষে কহিল গুরু -
বটেরে, ইহা যে দারুণ উভোসঙ্কট!
শুনিয়া গুরুর কথা চোরা কহে -  
গুরুজি, তোমার কথা শুনিতে যে লাগে বড়ই উদ্ভট।
শাস্ত্রে কহে, অন্ধ পাখিরেও খোদা দেয় খাবার।
তাহলে বল, আমার ক্ষুধার কে লইবে ভার?
পড়িয়াছি আমি ক্ষুধা পেটে গৃহস্থ ঘরে ধরা
তাহাকেই লইতে হইবে আমার ক্ষুধার ভারা।
গৃহস্থ কহে -
বেটা চোরার আছে দেখি শাস্ত্রীয় জ্ঞান,
নিছক পেটের দায়ে হইয়াছে তাহার জ্ঞানের প্রয়াণ।
কহে চোরা-
আমি তো চোরা, চোরের নাহি থাকে শাস্ত্রীয় জ্ঞান।
আমাকে করিয়া মাফ
তুমি তো চাহিতেছ তোমার পাপের পরিত্রাণ।  
গৃহস্থ এইবার হাঁকে-
ওরে চোরা, করিলে তুমি আমার গৃহে চুরি।
আর হইলাম পাপি আমি,  
ইহা যে ধর্মের কথা, কেমনে তাহা মানি?
তবু দন্ডাজ্ঞা তোমার করিলাম মাফ
আমার অন্নে পুর্ণ করি উদর,
গৃহখানা মোর ত্যাগ কর দেখি
হইবার আগেই ভোর।


মোঃ মজিবুর রহমান।