তখন আমার বয়স কত? দশ হয়ত হবে।
পোষা কুকুর কালু আমার এসে ছিল সবে।
ঈশান কোণে মেঘের রাশি দিন গড়িয়ে বিকাল।
বর্ষাভেজা কালুর তখন অবস্থা যে বেহাল।
একটু রোদের পরশ পেতে যেই বসেছি মাঠে।
কালু এসে চুপটি করে আমার শরীর চাটে।
শীত ঠক ঠক শরীর যে তার চোখের কোণে জল।
বলছে যেন করুণ সুরে , আমার কে তুই বল?
ছোট্ট কালুর চোখের ভাষায় আপনজনের সুর।
সেদিন থেকেই দুইজনেতে আনন্দ ভরপুর।
কালু সেতো নয়ত পশু ,ভাইটি যেন আমার।
যখন তখন ঘুরে বেড়াই খাল,বিল আর খামার।
বাইরে যখন যেতাম কোথাও একা তাকে ছেড়ে।
সেই কটা দিন কালু যেন থাকত নিজের ঘোরে।
ট্রেনে করে গেলে পড়ে সে স্টেশনে যেত।
এগিয়ে দেওয়ার ছলে সে ট্রেনের পিছু নিত।
আঁতকে উঠত বুকটা আমার ছুটতে তাকে দেখে।
ট্রেনে আমি বাইরে কালু ছুটছে আমার শোকে।
কালুবিনে বেড়ানোর আনন্দটাই মাটি।
বিদেশ ছেড়ে দুদিন বাদেই দেশের দিকে ছুটি।
আমার পেয়ে কালুর যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচা।
লেজটি নেড়ে আমায় ঘিরে সে কী তার নাচা!
গভীর রাতে ফিরতে বাড়ী যদি বিপদ আসে।
কালু বলেই ডাকলে পরে তাকে যে পাই পাশে।
এমন করেই যাচ্ছিল দিন কাটছিল যে রাত।
আমার সাথে কালু আর ,আমি কালুর সাথ।
সইল না তার যার বিষেতে কালু আমার মলো।
আমার কোলেই কালু আমার শেষ নিঃশ্বাস নিল।
তার বিহনে আজও আমার কেঁদে চলা প্রাণ।
কালুই আমায় দিয়েছিল সত্যিকারের মান।