চিরশ্যামল ছায়াঘেরা বাড়িটার ওপাশে
কচুরিপানায় ঠাসাঠাসি পুকুর পাড়ে
হিজলের গাছটা আজো তেমনি আছে ।
আজো অগণন ফুল ফোঁটে ডালে ডালে
ফুলপাখিরা গান ধরে আপন মনে
ভোমর-অলি ছুটে আসে ঘ্রাণে ঘ্রাণে,
আজো তেমনি করে ফুল ঝরে
ঘাসের মাদুরে ।
শুধু একজনই আসে না আর
হিজলের ছায়া তলে আঁচল ভরে ফুল কুড়াতে,
পাড়া গাঁয়ের অবলা কিশোরী ।
হাতে কাঁচের চুড়ি
পায়েতে রুপোর মাদল বাজিয়ে
বাতাসে কাজল কালো চুল উড়িয়ে
লাল পাড়ে সবুজ বর্ণের শাড়ি পড়ে
রোজ পড়ন্ত বিকেলে ছুটে আসতো ফুল কুড়ানোর নেশায় ।
তাকে দেখে আমার চোখ দুটো
ঘুরে ফিরে থমকে দাঁড়াতো হিজলের গাছটার তলায় ।
এক বিকেলে না দেখলে মনে হত
হাজারটা বিকেল দেখিনি তারে,
অবাধ্য মনটা ছুটে বেড়াতো দিগ্বিদিক ।
তাকে দেখেই স্বপ্ন বুনেছিলেম অশেষ,
হৃদয়ের উঠোনে স্বযত্নে গড়েছিলেম
স্বর্গ দেবীর প্রতীমা ।


একদিন কিছু না বলেই কোথায় হারিয়ে গেল
আমার পৃথিবী থেকে ।
নীরবে নিভৃতে আজো খোঁজে ফিরি তারে
নিজের অজান্তে ।
এখনো আনমনে চেয়ে থাকি হিজলের গাছটার পানে...।