আমি অবশ্যই তাহাকে ভালোবাসিয়াছি,
পৃথিবীর প্রথম বসন্ত থেকে; তখন সে বসন্তৎসব ধারণ করতেও শিখেনি শরীরে।
চোখে আয়না ছিলো না তার, সামনে বা পিছনের প্রতিচ্ছবি ভাসতো না তাহাতে, আমিই ছিলাম দৈশিকদর্শী।
এখন হয়তো সে একটা উত্তল লেন্সের আয়না লাগিয়েছে চোখে, তাই পারতপক্ষে ক্রমেই আমি ঝাপসা হয়ে গিয়েছি।
এভাবেই ভালোবাসারা ভোল পাল্টে অন্য গল্পে যোগ হয়!


আমি তাহাকে আবারো ভালোবাসিয়াছিলাম,
ইলিশা বৈশাখে।
যখন নিষিদ্ধ ছিলো, মা মাছের ডিম দেয়া সময়ে।
এখন সময় পাল্টে ভীষণ দুষ্কৃতকারীর কবলে বৈশাখ!
আর এখন তো তাও হয় না, কি এক করোনা নাকি উত্তালে ঢেকে দিয়েছে।
এইভাবেই বাত্তি হওয়া প্রেমটাও ঝড়ে গিয়ে মাতাল হয়েছে পান্তা ভাতে!
এখন ভালোবাসা হয় লকডাউনের গল্পে মোড়ানো নতুন চিন্তাধারায়।


আমি অবশ্যই তাহাকে ভালোবাসিয়াছিলাম,
পথ না চেনা ব্যস্ত ঢাকায়।
অঙ্কুরেই বিনষ্ট হওয়া থেকে বাঁচিয়ে তোলা নৌকায়।
এখন প্রসস্ত রাস্তায় ইস্টিমার, উড়ন্ত ট্রেন চলে; পোষায় নাকি সরু পথটায়!
হাঁটা শিখে গেছে পিপিলিকা, পাহাড়ের চূড়ায়; বিজয়ী অন্য কোন সঙ্গী ছাড়া কি উৎযাপন মানায়?
শুরুর ভালোবাসা খাদে পরে মরে গেছে, ওখানে হেলিকপ্টার নিয়ে উড়ে গেছে তাহাদের দল।
নতুন ভালোবাসাও উড়ন্ত সূচনায় অগ্রগামী হাওয়া; সে পুরাতন,কালবৈশাখে পরে কোনরকমে চিতার জলাশয়ে!


আমি তাহাকে আসলেই ভালোবাসিয়াছিলাম,
বিপন্ন রাত্রিতে।
এখন রাত গভীর হয়,সে ঝাপিয়ে পরে কুর্নিশ মাগে অন্য মাচায়,এখানে শিমের বিচি শুঁকিয়ে যায় না, নতুন ফুলে মধূৎসব।
এই রাত আমায় কুৎসিত কবিতা লেখায়, এই রাত তোমায় টিপ্পনী কাটে তবু হিসেব তো,ভালো বাসায় ভাড়া থাকে!
প্রেম কি ভাড়া পাওয়া গিয়েছিল তবে!
সে যাই হোক, সংক্রমণ বেড়েছে বলেই চিরতরে লকডাউনে চলে গিয়েছে প্রেম।
শুধু আলো-অন্ধকারে পার্থক্য খুঁজে পা ফেলতে হয়, সংক্রমিত ভালোবাসায়।






নিরিবিলি, নবীনগর
০৯/০৪/২০২১