তোমার জন্য রেশমি চুড়ি কেনা হয়নি আমার কোনদিন।
অথচ কথা ছিল, আগামী বৈশাখী মেলায়
মেঘের লালপেড়ে গরদ শাড়ির সাথে রঙ মিলিয়ে
তোমার দুহাত ভরে কিনব অন্তত চার ডজন রেশমি চুড়ি।
কপালে একটা লাল টিপ পরে তুমি ফ্রেঞ্চ টুইস্ট খোঁপায়
গুঁজে নেবে প্রয়োজন মাফিক হলুদ জারবেরা।
আমরা দুজন শাটল ট্রেনকে সাক্ষি রেখে রেল লাইনের
মতো পাশাপাশি হাঁটব, কোনো কথা না বলে।
বহুদূর হেঁটে, ক্লান্ত হয়ে,
মুখোমুখি বসে সস্তা দোকানে ফুচকা খাব।
তারপর তোমাকে আচরাঙা দিঘির জলপ্রাসাদে পৌঁছে দেব।


ফিরতি পথে তুমি পুলকের উচ্ছলিত ঢেউয়ে প্রমোদের ডিঙি
ভাসিয়ে বলবে-কিছু বলছ না যে!
আমি ভাবলেশহীন নির্জনতা কণ্ঠে ধরে বলব, কী বলব?
তুমি বাক্‌পটু রেডিও জকির মতো কথা ঘুরিয়ে বলবে-
এই যে, কেমন কাটলো আজকের সময়টা?
আমি ঠোঁটের কোণে অরণ্য অবধি এক হাসি টেনে বলব-
আবহাওয়া অফিসের রিপোর্ট দেখে তোমাকে বিস্তারিত
জানাব, আজ যাই।
তুমি বরফ বাষ্পের মতো কম্পমান ঠাণ্ডা হাতে আমার
জোনাক বসা ডান হাতের সলাজ নীল আঙুল তুলে নিয়ে
বলবে-এটুকুই?
আমি মাধবীলতা ফুলের মতো মাথা দুলিয়ে বলব-
হুঁ। বেশ ভাল ছিল ফুচকা খাওয়ার আইডিয়াটা। আর...
তুমি কৌতূহলের জানালা খুলে উঁকি দিয়ে বলবে-আর কী?
এবার আমি ক্ষুধাকাতর ঘন কুয়াশার মতো বিন্যস্ত হয়ে
তোমাকে অবরুদ্ধ করে বলব-আর তোমার লাল টিপ।
তুমি এমন নাটকীয়তায় খুব অপ্রস্তুত হয়ে বলবে-আর?
আমি তোমার খর তৃষিত নয়নে ক্রমশ অস্তমিত হতে হতে
বলব-হিমাংশু, আবার দেখা হবে।