আমি কিন্তু বড্ড প্রেমিক ছিলাম,
যাকে অনেকেই পাগল সাব্যস্ত করেছিল।


কেউ বলত ও যেন কেমন, কেউ বলত ও অন্য রকম,
কেউ বলত আউলা ঝাউলা, কেউ বলত পুরাই পাগল।
আমাকে নিয়ে নাকি পরিবারে শান্তি নাই, সমাজে শান্তি নাই।
সবার কপালে ভাজ।
আমি প্রেমিক মানুষ,
আমার প্রেমে পাগলামি আছে কিন্তু আমি পাগল নই।
তোমরা যেমন ব্যকরণ মেনে ভালোবাসো,
আমার ভালোবাসায়
কোন ব্যকরণ নেই কোন সিলেবাস নেই।
আমি আকাশের দিকেও ভালোবেসে তাকিয়ে থাকি,
তোমাদের কাছে তা অনর্থক। আমি ফুল দেখি পাখি দেখি,
পথের পাশে গজানো ঘাস দেখি।
এমনকি রাস্তায় পড়ে থাকা চানাচুরের প্যাকেটটাও দেখি।
আমি ভালোবেসে দেখি।
তোমরা যা এড়িয়ে যাও আমি তা হাতে নিয়ে দেখি।
কেউ কেউ বলে কবির ভাব ধরছো নাকি।
আমি বলি আমি কবি না, আমি প্রেমিক।
আমি সব কিছু ভালোবাসি পাগলের মত ভালোবাসি।
আমার প্রেমে পাগলামি আছে কিন্তু আমি পাগল নই।


আমাকে সুস্থ্য সামাজিক করতে ব্যপক আয়োজন হলো।
বাড়ির পাশের জামগাছে আমার নাম লেখা তাবিজ ঝোলে।
দরজার চৌকাঠে কবচ দোলে।
আমাকে এখন
রুটিন করে প্রতি সপ্তাহে ডাক্টার খানায় যেতে হয়।
ডাক্টার ঘুমের ঔষুধ দেয়।
আমি ঘুমাতে ঘুমাতে সর্বশান্ত হয়ে যাই।
আমি পাগলামি ভুলে যাই, আমি প্রেম ভুলে যাই।
আমাকে সর্বশান্ত করে অবশেষে সবার মুখে হাসি ফোটে।
ডাক্টার বাবু গর্বের হাসি হেসে বলে,
বাসায় গিয়ে ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করুন, সব ঠিক হয়ে যাবে।
ডাক্টারবাবু আমার ভালোবাসা হত্যা করল, আমার মন হত্যা করল,
আমাকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আমাকে হত্যা করল।
তার পুরষ্কার হিসেবে ডাক্টারবাবুর হাতে বর্ষেসেরা চিকিৎসকের সনদ উঠল।
অতঃপর
আমার ঘরেও শান্তু ফিরে এলো, সমাজে শান্তি,
আকাশে শান্তি, বাতাসে শান্তি।
আর আমি সুস্থ্য সামাজিক জীব হয়ে উঠলাম।
আমি এখন না প্রেমিক না পাগল।