মা আমার মা
মোজাম্মেল সুমন


ছোটো থেকে বড়—আদরে আদরে গড়ো—তুমি যে প্রিয় মা,
তোমাকে বড় বেশি—আমি ভালোবাসি—নেই তার কোনো সীমা।
ছিলাম তোমার গর্ভে—ব্যথা পেয়েছো মরমে—তীব্র কষ্ট সহে সহে,
ভূমিষ্ঠ হলাম আমি—দেখি পরমাপন তুমি—জরায়ে নিলে সস্নেহে।


করেছি কতো প্রসাব—হয়নি তবু ঘৃণার ভাব—তোমার অন্তরে,
আদর আর সোহাগে—নিয়েছো তোমার সঙ্গে—পরিস্কার করে।
দেখালে জগতের জ্যোতি—তুমি শ্রেষ্ঠ দরদি অতি—বিশ্বখোদার পরে,
না খেয়ে খাওয়ালে—বড় করলে তিলে তিলে—মা ডাকি শ্রদ্ধাভরে।


তোমার আদর স্নেহ—দেয় নাতো কেহ—তোমার মতো করে,
থাকলে তোর আঁচলে—সুখের দ্বার যে খোলে—জীবন যায় ভরে।
বলেছো,পড়বি পড়া—জানিবে এই ধরা—শ্রেষ্ঠ হবে সবার,
হবে আদর্শ সন্তান—শিখবে শ্রদ্ধা সম্মান—আমার অহংকার।


শুনলে তোমার কথা—দূর হয় কষ্ট ব্যথা—মা তুমি পরম আপন,
তোমার একটু সুখে—বর্শা হানিবো হাসিমুখে—জীবন দিবো বিসর্জন।
মধুমাখা মুখের হাসি—হার মানে তাতে রবি শশী—সেরা সৃষ্টি বিধাতার,
তোমার পরম আশিষে—শত দুঃখ ঘুচে আসে—সারা দুনিয়ার।


কখনো তোর সন্তান—ভুল পথের পেলে সন্ধান—করিস মা শাসন,
বড় আমি হই যতোই—তোর কাছে তো বড় নই—তুচ্ছ এই জীবন।
যেখানে ভালো—সেখানে চলো—বলেছো যে সর্বদাই,
জীবনপথে চলতে—হঠাৎ একটু থামতে—মনে পড়ে কথাটাই।


তুমি যে পরশমণি—ধন্য মোর জীবনখানি—বিশ্ব সংসারে,
দেখেছি যতো জগতে—ঊর্ধ্বে তুমি তাতে—রয়েছো অন্তরে।
খোদার পরে তোমার আসন—রেখেছি থাকবেই চিরন্তন—শুভ কামনা,
মাগো যেয়ো না'কো আগে মরে—আমায় একা শূন্য করে—সইতে পারবো না।


সন্তানের যদি অসুস্থ লাগে—নিদ্রাহীনে থাকো জেগে—করো সেবা,
ইবাদাতে স্রষ্টাকে স্মরো—সন্তানকে ভালো করো—মা তুমি আমার কা'বা।
সাধ্যের মধ্যে সবচাইতে—খাওয়াও পড়াও জগতে—অকৃত্রিম ভালোবেসে,
সর্বদাই বলে তোমার মুখ—তোর সুখে আমার সুখ—তুমি শ্রেষ্ঠ ইতিহাসে।


পাশে রেখে মমতার স্বরে—শেখালে জীবন ভরে—ভালো মন্দ ন্যায় অন্যায়,
তোমার কথা চলার পাথেয়—করবো না কভু হেয়—আছি যতোদিন দুনিয়ায়।
মা থেকে মানব জগত—তাতে ছিল স্রষ্টার রহমত—বাবারও ছিলো ভূমিকা,
বাবা ও তুমি সেরা—জগত কালো তোমরা ছাড়া—মা জননী সাহসিকা।


চোখের একফোঁটা বিন্দু—মনে হয় বিষাদসিন্ধু—ঝরাবো না কখনো,
মা তুমিই আমার পৃথিবী—জীবনের শ্রেষ্ঠতম ছবি—তুমিই অনন্য।
গগণে তারার রাজা চাঁদ—জগতে তুই সুখের প্রাসাদ—ধন্য জীবনামার,
আলো অন্ধকারের পথ—সূর্য নেয় রাতের শোধ—এ জীবন তোমার।


তুমি মোর বাঁচার কবিতা—জরায়ে রেখেছো মাতা—পুণ্য প্রাপ্তি তুমি,
আমি সার্থক চিরসফল—পেয়েছি তোর আঁচল—তাই কপালে চুমি।
মা বাবা অমূল্য ধন—জগতে খাঁটি আপন—তাই বিনম্র সম্মান,
করি স্রষ্টার ইবাদাত—চাই মা বাবার দুটি হাত—গাই এই গান।


রাতকে সাজায় চন্দ্র—জোনাকিরা মন্ত্র—নিয়ন্ত্রণ সৃষ্টিকর্তার,
জীবন আমার চলছে—তুমি থেকো মা কাছে—হয়ে হাতিয়ার।
দিয়েছো আদর যত্ন—করেছো জীবন পূর্ণ—শিশু বয়সে,
আমি সন্তান শুদ্ধ—এখন বা যখন হবে বৃদ্ধ—সেবিবো অনায়সে।


জানি তোর দুধের ঋণ—শোধ হবে না কোনোদিন—যতো সেবা করি,
ভালো হয়েছে তাই—সারা জীবনটাই—তোমায় যাবো স্মরি।
ঐ যে প্রভু আছে বসি—করলে তোমায় খুশি—আমারি মঙ্গল,
জীবন আমার ভরবে সুখে—হাসি ফুটালে তোর মুখে—দু'কুলে উজ্জ্বল।


তুমি জগতের আলো—বাসি তাই এতো ভালো—নেই তোমার তুলনা,
তুমি সকালের সূর্য—দেখে আরম্ভ করি কার্য—তোমার মুখখানা।
জীবন আমার যাচ্ছে—ধীরে ধীরে হারাচ্ছে—সময়ের হাত ধরে,
বুঝিতেছি খুব স্পষ্ট—মা তুমি কতো শ্রেষ্ঠ—সন্তানের তরে।


তোমাতে স্বর্গ নরক—দেখিতেছি অপলক—সব ধর্মে পাই,
জান্নাত তোমার পদতলে—মহানবী (সঃ) বলে—মা'সম কিছু নাই।
বলো যদি মুখ ফুটে—আসে সন্তানের ললাটে—মহাকল্যাণ ভেসে,
প্রার্থনারত দুটি হাত—কবুল হয় মোনাজাত—স্বর্গীয় আবেশে।


তুমি মসজিদ মন্দির—গির্জা প্যাগোডা ধরণীর—তোমাতে ধর্মকর্ম,
এই সুন্দর দুনিয়ায়—সেবিতে স্রষ্টা ও তোমায়—হয়েছে আমার জন্ম।
মা পাশে যেনো পাই—জীবনে সর্বদাই—আদরমাখা দুটি হাত,
তুমি যে সুখের খনি—দুটি চোখের প্রিয় মণি—আমারি জান্নাত।


উৎসর্গ: আমার মা'কে