সত্যি বলছি মা, মাত্র আর ক’টা দিন
দেশীয় এ শ্ত্রুগুলো নিধন শেষ হলেই
অসহায় রুগ্নপ্রায় হরিণ ছানাগুলো
একটু সুস্থ হয়ে উঠলেই
খরগোশ ছানারা নির্বিঘ্নে ঘাসের মাঠে ছুটলেই
প্রজাপতি ফড়িং সুঁইচোর ভুঁইচোর বাগানে এসে জুটলেই
আম জাম জারুল পলাশ পিয়াল পারুল
নাম না জানা থোকা থোকা বন ফুল
বৈচি বেতুল চারপাশে ফুটলেই
বাতাসে মৌ মৌ সুবাস ছুটলেই
আর কৃষকের স্বপ্নের মৌসুমী ফসল
সুস্থ সুন্দর নিরাপদে ঘরে উঠলেই
সংখ্যা লগুদের অর্পিত ও দেবত্ব সম্পদ নিজেরা ফিরে পেলেই
ধর্মে ধর্মে অধর্ম, বিভেদ, হানাহানি ঘুচে গেলেই
নারী, মুক্তযোদ্ধা, মানুষের স্বঠিক সমর্যাদা ফিরে পেলেই
স্বাধীনতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শেষ হলেই
শহীদ মুক্তযোদ্ধাদের আত্মায় শান্তী ফিরে পেলেই আর
প্রতিদিনের অপঘাত অপমৃত্যু বন্ধ হলেই
স্বাধীনতা নামের সোনালী সূর্যের স্বপ্ন আলো সবার আঙিনায়
দুয়ার বারান্দা গুলগুলি মেঝেয় জানালায়
দুঃখী মানুষের স্যাঁতস্যাঁতে ঘরের একোণা ওকোণায়
আনন্দ ছন্দে ঢেউ খেলে নেচে গেলেই-
আমি অস্ত্র নামিয়ে যুদ্ধের পোশাক পাল্টিয়ে
গাঁয়ের সেই পোশা্কে সেই চাষার ছেলে মজুরের ছেলে
অভাগা মায়ের এক দামাল ছেলে
ধানের ক্ষেত, মাঠের ধার, নদীর পার
খাল বিল বাঁশের সাঁকো, বন ঘেঁষা পথ
মন ঘেঁষা দেবদারু ঝাউ শিমুলের ছায়া পেরিয়ে
হাটখোলা মঠখোলা বটতলায় অপেক্ষমান মানুষের ভিড়
তাঁদের সাথে আদাব সালাম হাতে হাত বুকে বুক  মিলিয়ে
কুশল বিনিময় শেষে তোমার খোকা অবশেষে
তোমার কাছেই ফিরে আসবে মা।


মাত্র তো আর কটা দিন
জাতির এই সামান্য আশা সামান্য ঋণ
তার কিছুটা শোধ হলেই
আমি অস্ত্র জমা দিয়ে তোমার কাছে ফিরে আসব মা।
তোমার এ চিঠি আর আমার হাতের অস্ত্র
দু’হাতে ছুঁয়ে কথা দিলাম
আমি তোমার কাছে ফিরে আসব মা
ফিরে আসব কথা দিলাম।