এখানে রাত্রির পর রোদ্দুর মাখা সোনালি সকাল,
দুয়ার পেরুলে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি হাওয়ায় চঞ্চল।
উঠোনে মাচার উপর শিম ফুলেদের কথকতা,
পৌষের কুয়াশায় উড়ে আসে ক্লান্ত বকের দল হিম সন্ধ্যায়।
এখানে দীঘির শ্যাওলা জলে হাঁসের তুমুল সাঁতার,
বিলের জলে জেগে উঠে শাপলার লাল সাদা মুখ তলে শালুক জমা।
এখানে বেগুনের নরোম পাতার ছাউনিতে বাঁধা টোনা-টুনির ছোট্ট সংসার,
তালের শক্ত পাতার তলে বাবুইয়ের অদ্ভুত কারুকাজ।
এখানে জোনাকিরা ঢেউয়ের মতো ভেসে বেড়ায় অন্ধকারে,
চাঁদের রাতে প্রাণ ফিরে পায় শেওড়া গাছে শাঁকচুন্নির গল্পেরা।


এখানে তপ্ত দুপুরে দেখা মেলে মাছরাঙার চৌকশ চোখ,
একই ফুলে বসে কালো ভ্রমর, মৌমাছি আর ধূসর ফড়িং।
চৈত্রের রোদে পথের ধারে জ্বলে উঠে সারি সারি ভাঁটফুল,
হিজল, অশথের পাতায় পাতায় লেগে থাকে শিশিরের চুমু।
কদমের হলুদ বুকে ঝরা বৃষ্টির বসবাস আষাঢ়ের দিনে,
এখানে সাদা মেঘের মতো শরতের কাশফুল হাওয়ায় মাতাল।
বটের ছায়ার তলে জমে উঠে ক্লান্ত দেহের সাজানো বিশ্রাম,
এখানে মাটির গন্ধে উল্লাসে ভরে যায় দেহের সবকটি কোষ।
এখানে নীল আকাশের তলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জমি উৎকর্ষতায়,
এখানে দরিদ্র কৃষকের ভালোবাসায় বাঁচে ফসলের প্রাণ।
তুমি যাও পৃথিবীর আর সব দেশে, পাবেনা এইসব, সবুজ আঁচলের মাঠ,
এমন মায়ের মতো করে পাবেনা তুমি বাংলার মাটির আদর।।