অজ গাঁয়ের কিশোরী এক
এসেছে আজ কাজের খোঁজে,
দিক জ্ঞান হীন নিথর তাই
তিলোত্তমার ভিড়ের মাঝে।
কোন পথ কোনদিকে যাবে
কোথায় গিয়ে মিশবে শেষে,
কুল কিনারা পায় না হদিশ
জনজোয়ারে যায় সে ভেসে।
কার কাছে সে চাইবে কাজ
জানে না তার কোন ঠিকানা,
চলতে চলতে থমকে দাঁড়াই
যেন সে এক রাতের কানা।
কোন জন যে বহিরাগত
কোন জন যে স্থায়ী হেথা,
পাইনা খুঁজে বলবে কাকে
অন্তরে তার দুঃখ ব্যথা।
কি বেদনায় এসেছে আজ
কি কষ্ট তার মাথায় চাপা,
তার মনের যাতনা গুলি
পরিমানে যাবে না মাপা।
পরিবারের সে বড় মেয়ে
দ্বায়িত্ব সব তার উপরে,
ঔষুধ পত্র কিনতে হবে
শয্যাশায়ী পিতার তরে।
মাতাও তাহার রুগ্ন প্রায়
অন্ন জোটেনি দু দিন হলো,
মিড ডে মিলে ভায়ের আহার
এই ব্যথা কে শুনবে বলো।
অনিশ্চয়তার জীবন ভেবে
বেরিয়ে পড়ে কাজের খোঁজে,
কলকাতারই গোলকধাঁধায়
হারিয়ে গেছে ভীড়ের মাঝে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল শেষে
ঘনিয়ে এলো আঁধার রাতি,
ধীরে ধীরে জ্বললো ওঠে
ব্যস্ত নগরের সকল বাতি।
হাঁটছে শুধু হেঁটেই চলেছে
পায় না ঘরে ফেরার পথ,
কর্ম সন্ধান অন্ন জোগাড়
ব্যর্থ সকল মনোরথ।
ক্ষিদের জ্বালা ক্লান্ত দেহ
বসে পড়ে সে অবশ হয়ে,
একটু দূরে দু চার জনে
দেখছে লোলুপ দৃষ্টি দিয়ে।
চতুর্দিক জনশূন্য হলে
এগিয়ে এলো কুকুর গুলো,
হাত পা ধরে টেনে হিঁচড়ে
নির্জনে তারে নিয়ে গেল।
একজন মুখ চেপে ধরে
এক-একজন কুমারীত্ব হানে,
রক্তাক্ত করে পালিয়ে গেল
ফেলে দিয়ে তারে অচেতনে।
অজ্ঞান প্রায় মূর্ছা সম
রইল পড়ে পথের ধারে,
ধুলায় গড়ায় মানুষত্ব আজ
যৌনাঙ্গে তার রক্ত ঝরে।
ভোরের আলো ফোটার আগেই
চোরা গলির এক দালাল এসে,
আদর দিয়ে শশ্রুসা করে
নিয়ে গেল তারে নিজ আবাসে।
কয়েক দিনের পর  তারে
বিক্রী করল পতিতালয়ে,
এখন মা বাবাকে টাকা পাঠায়
বাড়ি যাবে সে কোন মুখ নিয়ে।
বাবা বলে- "মেয়ে আমার
কলকাতাতে চাকরি করে,
সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এসেছে
এখন আমাদের সংসারে"।
মেয়ে বলে- "কোন বোন যেন
আসে না শহর কাজের খোঁজে,
চাকরি আশায় কি হয় দশা
যে ভূক্তভোগী সে জন বোঝে"।