"হ্যাঁ রে পটলা আজকে নাকি 'মে দিবস'
তা 'মে দিবস' মানে কি?"
টেবিল মুছ্‌ কাপ-প্লেট ধু, কি দিবস,
তা আমাদের জেনে কি!
তারা সবিনয়ে মালিকে গিয়ে জিজ্ঞাসে
"বাবু 'মে দিবস' কাকে বলে?"
"চুপচাপ কাজ কর শালারা, মারবো এমন
পড়বি গিয়ে টেবিল তলে"।
একটু পরেই এক শিক্ষক মহাশয়
হোটেলে খাবার খেতে এলে,
তারা চুপিচুপি এসে কর জোড় করে
দুজনে মে দিবসের কথা বলে,
শিক্ষক মশায় বলেন-"শুন হে বাছারা
একশো বছরেরও আগের কথা,
আট ঘন্টার বেশী কাজ করবে না
শিকাগোর শ্রমিক ছড়াল বার্তা।
দিকে দিকে সে বার্তা ছড়িয়ে পড়ল
শ্রমিকেরা করল হরতাল,
মালিকেরা গুলি চালাল শ্রমিকের'পরে
আন্দোলন করতে বানচাল।
মারা গেল কত অসহায় শ্রমিকেরা
শুধু ভবিষ্যত শ্রমিকের জন্য,
অবশেষে সরকার মেনে নিল দাবি
শ্রমিকের আট ঘন্টা কাজের মান্য।"
পটলারা বলে-"তবে যে মালিক খাটায় মোদের
সারাদিন রাত অষ্টপ্রহর,
সেই কাক ভোরে শুরু অর্ধরাত অবধী
আর কভু যেতেও দেয় না ঘর।
খাওয়া দাওয়া ঠিক ঠিকানা নেই
বেতন মিলে না হিসাব মত,
কলুর বলদের মতো, টেনে যায় ঘানি
কাকে বলবো মোদের বেদনা যত।
একশো বছরেরও আগের বিদ্রোহ
এখনো পৌচ্ছে নি আমাদের দেশ,
সরকার কেন রাখে না আমাদের খবর
মালিক শোষনে মোদের করছে শেষ।
আমাদের বয়স তো চৌদ্দোও হয়নি
তবু তো হোটেলে হোটেলে খাটছি,
অসহায় মা-বাপে আহার যোগাতে
অকাতরে মালিকের পা চাট্‌ছি।
কত কল কারখানায় গুদামে দোকানে
আমরা দিনরাত খেটে মরি,
আমাদের বলে মালিকেরা ফুলে ফলে
বাড়ায় টাকার অঙ্ক ভরি ভরি।
অশিক্ষায় আর গরীবীর জ্বালায়
মোদের নেইকো কোথাও নিস্তার,
অশিক্ষিত শ্রমিকের হিতে সরকার
করুক না মে দিবসের বিস্তার।"



পৃথিবীর সমস্ত খেটে খাওয়া মানুষদের প্রতি জানালাম হার্দিক অভিনন্দন, প্রীতি, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।