ভালোবাসি তোমারে
তুমি বুঝলে না আমারে
যতবার প্রেম নিবেদন করেছি
দাওনি সাড়া
শুধু বলতে শুনেছি আমি নাকি ব্যক্তিত্ব হারা!
আমি বলি
আমিও রক্তমাংসে গড়া
আমারও আছে একখণ্ড হৃদয়
ভালোবাসার চাষযোগ্য নিখুঁত ভূমি
আছে সুন্দর একটি মন
এক চিলতে রোদ দেখলেই বুঝতে পারি দিনের ঐশ্বর্য কেমন
আছে দু'হাত
হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেখতে পারি হৃদয়ের উত্তাপ
বুঝতে পারি অনুভূতির সব গোপন আলাপন
আমার মনের বাগানেও ফোটে গোলাপ, বেলী, টগর, জবা, হাসনাহেনারা
ভোরের পাখিরা করে কিচিরমিচির, মধ্যাহ্নে ডাকে কোকিল
বৃষ্টি আমারও ভালো লাগে
তারও আগে
বাদলও দিনের প্রথম কদমফুল ছুঁয়ে দেখি ভালোবাসার অনুরাগে
কাদা জলে আমিও খেলা করি তেপান্তরের মাঠে
ধুয়ে ফেলি আঁখি জল কষ্টগুলো যেন ভেসে না ওঠে
শীতের সকালে আমিও হাঁটি শিশির ভেজা ঘাসের বুকে অন্যের মত দু'পা ফেলে
নীরবে আমিও কাঁদি, দুঃখবোধ আমারও আছে
কষ্টের দংশন আমি বুঝি
চৈত্রের খরতাপে আমিও পুড়ি
বিষাদের ছায়া আমিও দেখি যতবার হাঁটি
বৈশাখের প্রথম প্রহরে রমনার বটমূলে
আমিও গেয়ে উঠি সমস্বরে
'মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা
অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা'
বসন্তে চারুকলার বকুল তলায়
আরো দশ কপোত-কপোতীর মত
আমিও ভালোবাসার রঙ গায়ে মাখি
প্রেমিক বানিয়ে নিজেকে
তোমার অপেক্ষায় রাখি
চোখ দু'টি উঁচু করে এদিক ওদিক তোমারে খুঁজি
সাবলীল ভাষায় আমিও কথা বলি
মনের কথাগুলো অবিরাম কবিতায় গেঁথে রাখি
পাণ্ডুলিপি অনেক হয়েছে
এসে দেখে যেতে পারো
আমার শোবার ঘর
এখন একখানা ছোটখাটো কবিতার ঘর
তোমার জন্য লেখা ওসব কবিতা
তবুও আমি পর
পরিশ্রম আমিও করি
হয়তো মাই নেটা একটু কম
তবুও ছুটে চলি পাহাড়ী ঝর্ণার কাছে
মন ভেজাই তার জলধারা ছুঁয়ে
পাহাড়ের চুঁড়ায় আমিও উঠি
মেঘ বালিকার সাথে কথা হয় চুপি চুপি
নীল আকাশ আমার সাহস দেখে ভয় পায়
সাঁতার আমিও কাটি নদীর মোহনায়
সাগরের নোনা জলে আমিও আলতো পাঁয়ে হাঁটি
মনের জানালা খুলে হৃদয়ের কথাগুলো ভাসিয়ে দেই  অপরিবর্তন অর্ঘ্য তোমার উদ্দেশ্যে
শরতের কাশফুল আমিও ছুঁয়ে দেখি
তার রঙ আমায় কাছে টানে বলে
রংধনুর সাত রঙ দেখে আমিও পুলকিত হই
জ্যোৎস্নার জলে আমিও স্নান করি ভরা পূর্ণিমাতে
স্বপ্ন দেখি
হয়তো তোমার মত করে নয়
আমারও আছে অহংকারী চোখ
যদিও তোমার মত ডাগর নয়
তবুও সে বুঝে মানবতা বোধ
এর পরও যদি বলো আমি ব্যক্তিত্বহীন
সে দোষ আমার নয়
আমার বিধাতার হোক জয়।


রচনাকাল
১৯.০৪.২১