কখনো চিঠি লেখা হয়নি
জীবনে একবারই লিখেছি
তাও অনেক ভেবে
শুধুমাত্র তোমাকে।
ওটাই আমার লেখা প্রথম ও শেষ চিঠি।
রবি ঠাকুরের শেষের কবিতা পড়ে
তোমাকে লেখার বোধে উৎসাহিত হয়েছিলাম।
কী দারুণ ভাষায় লাবণ্য অমিত কে চিঠি লিখেছে
শেষের কবিতায়
পারলে একবার পড়ে নিও।
'কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও?
তারি রথ নিত্যই উধাও
জাগাইছে অন্তরীক্ষে হৃদয়স্পন্দন
চক্রে পিষ্ট আঁধারের বক্ষ ফাটা তারার ক্রন্দন।
ওগো বন্ধু,
সেই ধাবমান কাল
জড়ায়ে ধরিল মোরে ফেলি তার জাল
তুলে নিল দ্রুত রথে
দুঃসাহসী ভ্রমণের পথে
তোমা হতে বহু দূরে।'
কী দারুণ আবেগ মিশ্রিত প্রাঞ্জল ভাষা
তাই না!
আমার সেই ক্ষমতা নেই
সেই ভাষা জ্ঞান নেই
তেমন আবেগ মিশ্রিতকরা শব্দের ভাণ্ডারও আয়ত্তে নেই।
এই চিঠি খানা খুবই সাদামাটা
যদিও রবিদার লেখা থেকে অধিকাংশ চরণ ধার করা।
চিঠির ভাষাগুলো লাবণ্যের যা অমিত কে লেখা
কিন্তু ওগুলো যে আমারও মনের কথা যা তোমাকে বলা-
'হে ঐশ্বর্য্যবান,
তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারি দান;
গ্রহন করেছ যত ঋণী করেছ তত আমায়।
হে বন্ধু বিদায়।'
একটা শেষ অনুরোধ করি;
শেষের কবিতায় লাবণ্যের লেখা চিঠি খানা যখন পড়বে
ভেবে নিও তার প্রতিটি চরণের কথা আমারই অনুভূতি ও তৃষার্ত আবেগের ব্যথা
যা তোমাকে লেখা।
ওগো
'তোমার হয় নি কোনো ক্ষতি।
মর্তের মৃত্তিকা মোর, তাই দিয়ে অমৃতমুরতি
যদি সৃষ্টি করে থাক, তাহারি আরতি
হোক তব সন্ধ্যাবেলা-
পূজার সে খেলা
ব্যাঘাত পাবে না মোর প্রত্যহের ম্লানস্পর্শ লেগে;
তৃষার্ত আবেগবেগে
ভ্রষ্ট নাহি হবে তার কোন ফুল নৈবেদ্যের থালে।
তোমার মানষ ভোজে সযত্নে সাজালে
যে ভাবরসের পাত্র বাণীর তৃষায়
তার সাথে দিব না মিশায়ে
যা মোর ধুলির ধন, যা মোর চক্ষের জলে ভিজে।
আজও তুমি নিজে
হয়তো বা করিবে রচন
মোর স্মৃতিটুকু দিয়ে স্বপ্নবিষ্ট তোমার বচন।'
আর কী লিখতে পারি বল
আমার নেই কোন ভাষা
আজ রাখি
পূর্ণতা পাক তোমার সকল আশা।
'মোর লাগি করিয়ো না শোক-
আমার রয়েছে কর্ম, আমার রয়েছে বিশ্বলোক।'


শংকর, ধানমন্ডি।
২৫.০৪.২১