আবাসনের সামনে বিশাল জটলা
ইতিউতি এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাঁচের টুকরো
মাটিতে এখনও শুকনো জমাটে রক্তের দাগ
ধক ধক করে হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল বেশ কয়েকগুণ
তবে কি আশঙ্কা সত্যি হল?।


গতকাল সন্ধাবেলায় শুনেছিলাম অপ্রীতিকর ঘটনার কথা
আত্মহত্যার হুমকি ছিল নির্যাতিতার মুখে
লিখিতবার্তাও চোখে পড়েছিল আবাসনের গেটে
আশেপাশের বাড়ির দেওয়ালেও কিছু পোস্টার চোখে পড়েছিল
পাড়ার চায়ের ঠেকের নিত্য চাখোরেরা মুচকি হেসেছিল
তাই নাকি?
ঢাক ঢোল পিটিয়ে আত্মহত্যা?
বেশ তো!! দেখায় যাক না, বেশ জব্বর চিত্রনাট্য।


না! সত্যি সত্যিই, আশঙ্কায় সত্য হল
অভিমানী মেয়েটি ঝাঁপ দিয়েছে
চার তলার চিলতে ফ্ল্যাটের জানালা দিয়ে।


কিছুক্ষণ আগেই ফিরেছে সকলে
শ্মশানের শেষকৃত্যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে
বিশালাকার জনাসমাগম হয়েছিল শেষযাত্রাতে
নামি দামি, গুণীজ্ঞানিদের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মত
সকলের হাতে ছিল ঢাউস ঢাউস প্ল্যাকার্ড
অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, ইত্যাদি ইত্যাদি
নিউজ চ্যানেলগুলিও চালিয়েছিল ব্রেকিং নিউজ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে।


আজ একপক্ষ কাল অতিক্ষান্ত
সব ভুলে মানুষজন আবার মেতেছে নিজ নিজ কর্ম কাজে
পাড়ার চায়ের দোকানে আবারও ভিড়ের সমাগম
হৈ হল্লা, হাসি ঠাট্টার চিরপরিচিত শোরগোল।


ভীত সন্ত্রস্ত অবলা কিশোরীর দল সশব্যস্ত 
ত্রস্তপায়ে হনহনিয়ে, দ্রুত এগিয়ে যায় বাড়ি অভিমুখে
বাড়িতে উদ্বিগ্ন মায়েদের করুণ মুখ
কপালে চিন্তার ছাপ,
জমেছে অল্প অল্প বিন্দু বিন্দু ঘাম
গৃহ কর্তার ইতস্ততঃ পায়চারি
বাড়ির মেয়ের আসতে এতো দেরি কেন করে?
বুক ধকপক করে, 
অদ্ভুত অদ্ভুত চিন্তা ভাবনা মাথায় ঘরে
হঠাৎ দরজায় পরিচিত টিংটং শব্দ 
আর উঁচু গলায় ডাক " মা,,,,,,ও মা,,,,
হাসি মুখে মায়ের অর্ভথ্যনা-- এলি মা?
মায়ের চোরা দৃষ্টি মেয়ের মনের অলিন্দে
কোনও অঘটন ঘটেনি তো?
মায়ের মনের কোণে এখনও আশঙ্কার বাদল
কি বলোতো মা?
তুমি ওভাবে ঘুরছো কেন?
এই তো আমি বেশ আছি।
আস্বস্ত মা,
মেয়ের মুখে চিলতে হাসি, স্বস্তির দীর্ঘস্বাস মায়ের বুকে
মনে মনে দুগ্গা-দুগ্গা জপ
যাক মা দুর্গার আশীর্বাদে 
ভালোই ভালোই ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরেছে নিরাপদে।