পাড়ার সেই দাদাটি দেখিয়েছিল স্বপ্ন
কৃত্রিম মায়াজালের জগতে বিভোর ছিল তার মন
অদৃশ্য সুখের অবিরাম হাতছানির ডাক
না পারেনি, সে ডাক ফেরাতে।


ভিটে মাটি ঘটি বাটি সবকিছু বেচে
বুকের ভেতর একরাশ স্বপ্ন নিয়ে
নিঃস্ব হয়ে দৌড়েছিল স্বপ্নের হাতছানির জগতে
বৃদ্ধা মায়ের কম্পিত হাতখানির কোমল স্পর্শ
অসহায় সদ্য বিবাহিতার চোখের জল
সব কিছুই ছিল বৃথা, পারেনি তার মন গলাতে
বেরিয়েছিল সুদূর প্রবাসে ভালো কিছু উপার্জনের জন্যে।


সূর্যের তীব্র তাপ আর প্রখর গরম উপেক্ষা করেই
পরিবারের সচ্ছল জীবন যাপনের আশায়
মগ্ন ছিল সে রোজগেরের অন্ধ খেলায়
বেশি আয়ের জন্য বেশি পরিশ্রম কি অনুচিত?


নব বিবাহিতার সুমধুর কণ্ঠের মুঠোফোনের আহবান
পারেনি বিরত করতে তারে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে
হাড়ভাঙা খাটুনির শেষে রাত্রির শঙ্কিত প্রহরে
কত কেঁদেছে সে একাকী নিভৃতে।


একদিন হঠাৎ এক ছোট্ট খবর প্রকাশিত হল
সংবাদ পত্রের ভেতরের পাতার কোনও এক কোণে
ধূলিসাৎ নির্মাণমান বহুতল শহরের প্রাণকেন্দ্রে
আর ভয়াবহ সে দুর্ঘটনায় কিছু শ্রমিকের অপমৃত্যুর।


বহুকষ্টে, অবশেষে বস্তাবন্দী দেহখানি এলো ফিরে
গ্রামের ছোট্ট চিলতে ঘরে
একপাশে চোখের জলশূন্য সদ্য বিধবার নির্বাক চেহারা
পাশে চিরদুঃখী অশীতিপর বৃদ্ধার বয়ে চলা অশ্রু বন্যা
প্রশাসনের তালিকায় নিশ্চুপে যোগ হল আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু।