***এক জমিদার পুত্রের ব্যাথা বেদনার কথা কাব্যে তুলে ধরা হয়েছে এই ছোট্ট কবিতাটির মাধ্যমে। বাস্তবের সাথে কবিতাটির কোনও মিল নেই, এক সম্পূর্ণ কাল্পনিক রচনা***
**************************


পরিত্যক্ত অট্টালিকা
স্মৃতি বিজড়িত উঠোন
মধ্যিখানে অবহেলায় শৈশবের হারানো স্মৃতি
বাড়বাড়ন্ত পরগাছা মহলের আনাচে কানাচে
মুখ গোমড়া সূর্যিমামার প্রবেশ নিষেধও সেখানে।


উদাসীন নয়নে চেয়ে বাবার প্রাণপ্রিয় গুড়গুড়ি
বার্ধক্যের ছোয়ায় বিপন্ন সে
জরাজীর্ণ আরাম কেদারাটিও অন্তিমলগ্নে
পরিত্যক্ত জলসাঘরের অসহায় ঝাড়বাতির বিষণ্ন হাসি
দেয়ালের কোণে কোণে অগুণতিক চামবাদুর ঝুলে
মনে করিয়ে দেয় পুরোনো দিনগুলি
ভেসে ওঠে স্মৃতির দর্পণে
বুকের মাঝে ওঠে হাহাকারের অসমাপ্ত ঝড়।


অন্দরমহলের জরাজীর্ণ দশা দেখে
বুক ফেটে বেরিয়ে আসে কান্নার দলা
অনাদরে পড়ে কারুকার্যে খোদিত পালঙ্কখানিও  
কতই না গৌরবময় শোভাকিত ছিল তার যৌবনখানি।


একটু দূরে কুখ্যাত কাছাড়ি ঘরে
হয়তো এখনও চলছে ষড়যন্ত্র
গোপন কুঠুরি ঘরে ফিসফাস শব্দ
হয়তো সেখানে চলছে লাশেদের গোপন বৈঠক
প্রতিশোধের অনলে জ্বলছে অতৃপ্ত আত্মারা।


বাতাসে এখনোও কান্নার রোল স্পষ্ট সুরে
পূর্বপুরুষদের বর্বরতার কাহিনী
ভেসে বেড়ায় বাতাসে বাতাসে
লিপিবদ্ধ তাঁদের কুখ্যাত ইতিহাস
জরাজীর্ণ অট্টালিকার ইটের প্রতিটি ছত্রে ছত্রে ।


কিন্তু ভুলিই বা কি করে
শৈশবের স্বর্ণালী দিনগুলো?
শৈশবের মায়াগুলো এখনও জেগে বিবর্ণ হৃদয়ে
শুধু কয়েক ফোঁটা অশ্রুপাত হল নীরবে
পেছনে কে যেন ডাকে
বাবু আর যাবেন না আগে
বিষধর সাপখোরেদের বাস ওখানে
সম্বিৎ পেয়ে ফিরে আসি ধীরপায়ে
পেছনে ফেলে এক লম্বা ইতিহাস
আর এক অন্তহীন দীর্ঘস্বাস।