শুনশান কুয়াশার আচ্ছাদনে ঢাকা গহীন রাত
মাঝ আকাশে উঁকি দেয় আধ-খাওয়া ভৌতিক চাঁদ
কুয়াশার ঘোলা চাঁদের কমলা আলোয়
এক অশরীরী ভৌতিক পরিবেশ সীমানার বাহিরে।


দূরে নদী কিনারে শতাব্দী প্রাচীন জাগ্রত শ্মশান
সেখানে নিত্যদিন আনাগোনা লাশদের
বিলীন হয়েছে কতই না অহংকার ক্ষণিকে  
শ্মশানের  জ্বলন্ত চিতার লেলিহান স্পর্শে ।


ধু ধু ধোঁয়ায় নিত্য জ্বলন বেচারা ডোমদের চোখে
পোড়া মাংসের বিকট গন্ধে ওষ্ঠাগত তাদের প্রাণ
গা গুলিয়ে আসে, তবুও নিরুপায়
অপেক্ষায় থাকে নতুন নতুন লাশদের আগমনের রাহে।


শ্মশান কোণে, ছোট্ট বাঁশ-চালার পাশে
এক মাটির দিয়া টিমটিমে জ্বলে
মনে হয় এখুনি নিভে যাবে হালকা বাতাসের মৃদু স্পর্শে
নিকটে বটগাছে হেলান দিয়ে আনমনে
কে যেন বাশুড়ি বাজায় বুক ফাটানো সুরে
অজান্তে ঝরে যায় অনাবিল অশ্রুধারা তার দু-গাল বেয়ে।


পূবের আকাশ উঠছে জেগে সদ্য ঘুম থেকে
পাখিদের কিচিরমিচিরে মুখরিত বাতাস
ধিকধিক করে এখনও জ্বলছে শেষ চিতার আগুন
কুণ্ডলী বেয়ে বেয়ে উড়ছে শেষ বেলার সাদা ধোঁয়া
ঠিক যেমন বিনি সুতোর মত ।


বাশুড়ির সুরে বিরাম শেষে এক মুঠো ভস্ম কপালে বুলিয়ে  
আর অল্প কিছু চিতাভষ্ম টিনের কৌটোই পুরে
ক্লান্ত পথিকের ন্যায় ধীরে ধীরে
এগিয়ে যায় নদীর কিনারা বেঁয়ে
সামনে সুদীর্ঘ, না শেষ হওয়া অন্তহীন পথ
পেছনে রয়ে যায় চিরতরে এ জনমের প্রেম  
আর জ্বলন্ত চিতার মাঝে অবশেষ প্রেয়সীর চিতাভস্ম।