ঘোষের ঘরেতে জনম নিয়েছি,
সাধারণ জীবনধারা;
জীবন পূর্তির সব পেয়েছি তবু
আভিজাত্যহীন ধরা ।

পাঁচের পরিবার দুই সহদরা,
একমাত্র আমি ভাই;
হাসি খুশি ভরা জীবন ছিল সদা
এইতুকু বলে যাই ।


জীবন গড়িতে ডাক্তার আবার
কেউবা ইঞ্জিনিয়ার,
আশা চেপে হলাম ইঞ্জিনিয়ার-
মান রাখতে সবার ।


পড়ার সময়ে ভালই ছিল
উচ্চাকাঙ্ক্ষার ভাব,
পড়া শেষে মনের আঁধারে-
ফিল্মের দিকে লাফ ।


প্রারম্ভে বেশ মজাই ছিল
আশা পূর্তির লক্ষ্যে,
প্রতিষ্ঠাহীনতা প্রতি পদে পদে
ছুরি মেরে দিল বক্ষে ।


বাবা জানে আমি চাকরী করি
দুপুর হতে সাঁঝ,
সরকারি চাকরীর নেশায়
বন্ধু বাড়ীতেই কাজ ।


কাজ করি সেতো চাকুরী নয়
পড়াশুনা করি ভাই,
দিবানিশি খাটি প্রতিষ্ঠা পেতে-
চাকুরীটা যেন পাই ।


বাবা জানে ছেলে চাকরী করেও
সরকারীর জন্য খাটে,
বদ্ধ পরিকর নিরুপায় ভয়ে-
অব্যক্ত পিতার তটে ।


কি করে বলি যে বেকার আজও
আশারুপ চাকরী পাইনি,
তাই  অতি সাধারণ চাকরীতেও
যোগদান করতে পারিনি ।


মা জানে শুধু এ গোপন কথা,
বন্ধুরা তো জানবেই;
অস্থির মন অপরাধে ভোগে, তবু ভাবি-
ভাগ্যের চাকা ঘুরবেই ।


ইচ্ছে ছিল একদিন  নির্মাতা হব
চলচ্চিত্র বানাব অনেক,
জীবন খেলায় আটকে আজও
স্বপ্ন মৃদু ক্ষণেক ।


তবু খেটে মরি এ বাড়ি ও বাড়ি
বন্ধুর দ্বারে দ্বারে,
কখনও বা বারাসাতের অদূরে কোন
লাইব্রেরীর এক ঘরে ।


আশা নিয়ে যেমন মানুষ বাঁচে-
আমার মনে ও তেমনি,
জমে আছে মহা-আশার পাহাড়
তোমাদের মনে যেমনি ।


জীবনাঙ্কন ভাল লাগে তাই-
সময় পেলেই আঁকি;
প্রকৃতির  সব  উলঙ্গ  মূর্তি
রঙ তুলিতেই ডাকি ।


এঁকে যাই হেথা মনে যাহা আসে,
দিবা-রাত-নিশি জেগে;
আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে-
স্বপনের কাছে মেগে ।


কল্পনার ওই অথৈ সাগরে-
ডুবে ডুবে ভেবে যাই,
যদি সেথা কোন মাহাত্ন্যপূর্ণ-
দৃশ্যপট পেয়ে যাই ।


সাহিত্য আমার বিরাট ভাললাগে-
একাকী ঘরেতে পড়ি,
পরে পরে শেষে আবেগের চাপে
না লিখিলেই যেন মরি ।


তাই তো আমার ক্লান্ত প্রহরে,
একটু আধটু লিখে ফেলে-
সিসৃক্ষু ম্যাগাজিনের পাতায়
নাম ওঠে তাই বলে ।


আত্মার সুখ সে তো আছে ওই
ফিল্মের পরিচালনাতে,
সরকারী কাজ সর্বাগ্রে, অতঃপরে-
মন সাধনাতে ।


সারাক্ষণ সদা খেটে যাই শুধু-
অবস্থার উন্নতি প্রাপ্তে,
পড়াশুনায় সাথে আঁকা-আঁকি-লেখা-
দিবস-রজনী রপ্তে ।


যতক্ষণ প্রান এ দেহে সজীব-
থামবো না কোন মতে,
লক্ষ্য হোক না যতটাই দূরে-
ভিড়িবে দুয়ারে স্বমতে ।


ততদিন  যাব   বিনিদ্রে   জেগে
ধরণীর বক্ষে মাথা রেখে,
যতদিন   ওই   শান্তির    আঁখি
চোখ মেলে নাহি দেখে ।


আসবেই ও মনপাখি বলে
করি তাই রক্ত-জল,
আসবেই সুদিন কষ্টের শেষে
আসবেই সেই সুফল ।


তাই খেটে যাই, তোমরাও খাটো-
শ্রমের ফল সুমিষ্ট;
আজিকার দিনে শ্রম বিনে আশা-
দুর্গন্ধে ভরা- তিক্ত-তিষ্ঠ ।।