ছোট্ট বেলায় বাবা পরম বন্ধু ও খেলার সাথী ছিলেন
আমার বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাবা কেন যে
কিছুটা দুরুত্ব সৃষ্টি করেছিলেন তা আগে বুঝিনি।
ক্রমশঃ বাবার শাসন, রাগ ও গাম্ভীর্যতায়
বাবাকে দূরের মানুষ মনে হতো।


ভয় ও শ্রদ্ধার সাথেই উনার হুকুম মেনে চলতাম,
বাঁধাধরা নিয়মের বাইরে যাওয়ার সাধ্য  ছিল না।
বখে যাওয়া সহপাঠীরা আমায় উপাধি দিয়েছিলো
"শান্তশিষ্ট  লেজ বিশিষ্ট”!


সন্তানের নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত বাবার কড়া শাসন থাকে,
মনোক্ষুন্ন ছেলেরা বাবা হওয়ার পর-
ঐ সব অনুশাসনের তাৎপর্য অনুধাবন করে।
সংসারের জোয়াল কাঁধে তুলে নিতেই নিজের মধ্যে
বাবা চরিত্রের হুবহু প্রতিফলন শুরু হয়।
বাবার মধ্যে যা কিছু অপছন্দের ছিল-
তাই নিজের স্বকীয়তাকে গ্রাস করতে থাকে।


সন্তানের ছোট খাটো বিপদ, আঘাত ও অসুখ বিসুখে
মায়ের মতো বাবার চোখে সহজে জল আসে না।
বাবার চেহারা দেখলেই বুঝা যায় তাঁর মন কাঁদছে
কিন্তু তিনি চোখের পানি সামলে রেখেছেন,
নিরাপত্তা ও ভরসার খুঁটি ভেঙ্গে পড়লে কি চলে!


মায়ের মতো সহজেই প্রকাশ পায় না বাবার স্নেহ মমতা,
বাবা আকাশের মতো উদার, অথচ পাহাড়ের ন্যায় দৃঢ়।
বাবা না হওয়া পর্যন্ত-  
বাবার ভালোবাসার গভীরতা অনুভব করা যায় না।
বাবা বট বৃক্ষের ছায়া, আগলে রাখে রোদ-বৃষ্টি -ঝড়,
সাগরের মতো বিশাল, মাঝে মধ্যে গর্জন এইতো বাবার মন!