হে মানব আর কত কাল কত সময় তোমার এই নিরুদ্দেশ ভ্রমণ?
মহা বিস্ফোরণ থেকে আজ অবধি তোমার এই নিদারুণ আগমন ?
কোন স্বর্গের আশায় তুমি ছিলে?
আর কোন স্বর্গে তুমি এলে ?
এক শুক্রকণার প্রচণ্ড আবেগের স্রোতে তোমার এই বিশ্বব্রহ্মান্ডে আগমন,
তারপর থেকে কত সময় তুমি হেটে চলেছো এই পৃথিবীর পথে পথে।
তোমার শৈশব শেষে যৌবন আসে, যৌবন শেষে আসে বার্ধক্য।
নদীর গতি বদলে যায়, স্রোতের আসা-যাওয়া থেমে যায়।
সহস্র দিনের গড়া বাঁধন ছিঁড়ে তুমিও হারিয়ে যাও অসীমে।
এখানে তুমি এসেছিলে এক সকালে, তারপর কেটে গেল সহস্র সকাল।
কত মমতায় বাঁধন গড়েছিলে আর ছিঁড়েছিলে কত বাঁধন,
কত প্রেমের স্রোত মস্তিষ্ক বেয়ে হৃদপিন্ড ছেদ করে নিঃশ্বাসের ফুয়ারায় হারিয়েছিল।
যৌবনের বসন্তে কত ফুল ফুটেছিল, কত পাহাড়ের বুকে নেমেছিলো প্রসবিনী ।
এর এই পৃথিবী তার কক্ষপথে ছাপ্পান্ন বার ঘুরে আসে,
তোমার চামড়ায় আসে ভাজ, ম্লান হয়ে উঠে যৌবনের সাজ।
স্রোতস্বিনী শুকিয়ে মঙ্গলের গতিপথ ভেসে উঠে।
তোমার যাবার বেলায় ঘটনা দিগন্তের উপার মাতে না উৎসবে,
তুমি ছুটে চলো আলোর কণাদের সাথে এই মহাকাশ জুড়ে,
সেখানেও জুড়ে আছে এক মহা প্রলয়ঙ্করী কালো বিহ্বর।
তোমায় গ্রাস করে নিয়ে যাবে শত কোটি আলোকবর্ষ দূরে।
তারপর কোন স্বর্গে তুমি যাবে? আর কোন স্বর্গে তুমি ছিলে?
কোথায় তোমার মায়ার সংসার, আর কোথায় তোমার শরীরের ভার?
তুমি তো একবিন্দু আলো যে কিনা অনন্তকাল ধরে ভেসে থাকে এই আকাশগঙ্গায়।